বায়ু দূষণ পেটের সমস্যার জন্যও দায়ী

বায়ু দূষণ পেটের সমস্যার জন্যও দায়ী

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৬ মে, ২০২৪

বায়ুতে ভাসমান অতি সূক্ষ কণার উপস্থিতিতে শ্বাসকষ্টের নানা সমস্যা হয়ে থাকে তা এতদিন জানা ছিল। এই দূষণকারী কণাগুলো ফুসফুসের গভীরে যেতে পারে, এই কণা শ্বাস নেওয়ার সময় রক্ত প্রবাহেও প্রবেশ করতে পারে। গবেষকরা জানাচ্ছেন ২.৫ মাইক্রোমিটারের কম (পিএম২.৫) ব্যাস বিশিষ্ট সূক্ষ্ম বায়ু কণা অন্যান্য ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যার জন্যও দায়ী। সাম্প্রতিক গবেষণা এই কণার উপস্থিতিতে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত যে সমস্ত উদ্বেগের কথা জানিয়েছে তা হল বায়ুতে ভাসমান পিএম২.৫ কণা লিভার, অগ্ন্যাশয়, অন্ত্র সহ পাচনতন্ত্রের ক্ষতি করতে পারে।
গবেষণায় জানানো হয়েছে পিএম২.৫ -এ পাচনতন্ত্রের কোশে স্ট্রেস প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এই স্ট্রেস প্রতিক্রিয়াগুলো কোশীয় অঙ্গাণু এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম, মাইটোকন্ড্রিয়া এবং লাইসোসোমে দেখা যায়। পিএম২.৫ এই কোশীয় অঙ্গাণুগুলোর কাজ ব্যাহত করে, কোশের মধ্যে একটা চেন প্রতিক্রিয়া তৈরি করে যার থেকে প্রদাহ এবং অন্যান্য ক্ষতিকারক প্রভাব হতে পারে। বিপাক ও ডিটক্সিফিকেশনের প্রধান অঙ্গ লিভার, পিএম২.৫ -এর প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যে পিএম২.৫ লিভারের মধ্যে প্রদাহ, স্ট্রেস প্রতিক্রিয়া, কোশীয় অঙ্গাণুর ক্ষতি, এবং শক্তি বিপাক ব্যাহত করার মতো নানা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এর থেকে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ এবং টাইপ২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই ভাসমান কণা অগ্ন্যাশয় ও অন্ত্রেরও ক্ষতি করতে পারে। অধ্যয়ন থেকে জানা গেছে পিএম২.৫ -এর প্রভাবে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের অগ্ন্যাশয়ের ক্ষতি, অন্ত্রের কোশের ক্ষতি হতে পারে। এই গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখার চেষ্টা করেছেন কিভাবে পিএম২.৫ -এ উন্মুক্ত হলে তা বিভিন্ন পাচন অঙ্গের মধ্যে যোগাযোগকে প্রভাবিত করে, সামগ্রিক পাচনক্রিয়াকে প্রভাবিত করে। এছাড়া গবেষকরা অন্বেষণ করছেন যে খাদ্যতালিকাগত বা ওষুধ পিএম২.৫ ক্ষতি কমাতে পারে কিনা। আগে কিছু গবেষণায় বলা হয়েছে, কিছু পুষ্টি উপাদান, যেমন মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ভিটামিন, পিএম২.৫ এর ক্ষতিকর প্রভাবের বিরুদ্ধে খানিকটা সুরক্ষা দেয়। ফার্স্ট হসপিটাল অফ জিলিন ইউনিভার্সিটির বর্তমান গবেষণা পাচনতন্ত্রের ওপর বায়ু দূষণের সুদূরপ্রসারী পরিণতি তুলে ধরেছে। ই-গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি-তে প্রকাশিত এই গবেষণা বায়ু দূষণের মাত্রা কমাতে আর এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে নিজেদের রক্ষা করার প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্ব দেয়।