লক্ষণ দেখা দেওয়ার আগে অ্যালজাইমার্সের সংকেত দিতে পারে নতুন সূত্র

লক্ষণ দেখা দেওয়ার আগে অ্যালজাইমার্সের সংকেত দিতে পারে নতুন সূত্র

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৭ মে, ২০২৪

ভুলো মনের মানুষদের নিয়ে আমরা অনেক সময় অনেক কথা বলে থাকি। আপাত ভাবে এই সমস্যা তুচ্ছ মনে হলেও, ভুলে যাওয়ার ব্যামো সব সময়ে মজার বিষয় নাও হতে পারে। কখনও কখনও স্মৃতিভ্রংশের সমস্যার সূচনা হয় এভাবেই। সামগ্রিক ভাবে স্মৃতিশক্তি লোপ, ভাবনাচিন্তার অসুবিধা, সিদ্ধান্ত নেওয়ার অক্ষমতা প্রভৃতি একাধিক সমস্যাকে বিজ্ঞানের ভাষায় ডিমেনশিয়া বলা হয়। সবচেয়ে বহুল ও দুরারোগ্য ডিমেনশিয়ার উদাহরণ হল অ্যালজাইমার্স। শুধু ভারতেই নয়, গোটা বিশ্ব জুড়েই বাড়ছে এই রোগের প্রকোপ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই রোগটি কার্যত গুপ্ত ঘাতকের মতো আসে।
অ্যালজাইমার্স রোগের নিরাময় আমাদের হাতে নেই। কিন্তু একটি নতুন আবিষ্কৃত বায়োমার্কার, কোনো ব্যক্তির শরীরে উপসর্গ দেখা দেওয়ার আগে রোগটিকে নির্ণয় করতে পারে। এর হাত ধরেই চিকিত্সা পদ্ধতি নির্বাচন করা যেতে পারে এবং গবেষকরা আরও সূক্ষভাবে দেখতে পারেন কীভাবে রোগটা হানা দেয়। বায়োমার্কারটি miR-519a-3p নামক মাইক্রোআরএনএ-র একটি অণু, এবং গবেষকের দল মনে করেন যে এটি আমাদের অ্যালজাইমার্স রোগের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক সতর্কতা ব্যবস্থা প্রদান করতে পারে।
ইনস্টিটিউট ফর বায়োইঞ্জিনিয়ারিং অফ কাতালোনিয়া (আইবিইসি) এবং স্পেনের বার্সেলোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের নেতৃত্বে, সমীক্ষাটি ব্যাখ্যা করে যে অ্যালজাইমার্সে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে miR-519a-3p এর উচ্চ মাত্রা পাওয়া যায়। মাইক্রোআরএনএ, miR-519a-3p হল ছোটো ছোটো নন-কোডিং আরএনএ অণু, যা কোশকে প্রোটিন উৎপাদন পরিচালনা করতে সাহায্য করে। এই মাইক্রোআরএনএগুলো শরীরে স্থিতিশীল থাকে এবং রক্তে সহজেই শনাক্ত করা যায়। ফলে রোগ সম্পর্কে সতর্ক করতে, চিকিত্সার প্রতিক্রিয়া পরিমাপ করতে বা সাধারণ স্বাস্থ্যের অবস্থা বুঝতে এই বায়োমার্কারগুলোর প্রয়োজনীয়তা খুব বেশি। এই miR-519a-3p অণুটি কোশীয় স্তরে প্রিয়ন প্রোটিন নামে এক ধরনের প্রোটিন উত্পাদনের সাথে যুক্ত। গবেষণায় ইঙ্গিত মিলছে, এই প্রোটিন অ্যালজাইমার্সের প্রাথমিক পর্যায়ে শরীরে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় এবং রোগ বাড়ার সাথে সাথে এর মাত্রা হ্রাস পায়। অ্যালজাইমার্স রোগীদের মস্তিষ্কের কলার রাসায়নিক পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে miR-519a-3p অণু প্রিয়ন প্রোটিনের উৎপাদন হ্রাসকে প্রভাবিত করে। তবে ঠিক কেন এমন হয়, তা নিয়ে নিশ্চিত নন গবেষকরা। তাই বিষয়টি নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলেই তাদের মত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four + seven =