ইউক্লিড ছায়াপথের রহস্য উন্মোচনে সাহায্য করছে

ইউক্লিড ছায়াপথের রহস্য উন্মোচনে সাহায্য করছে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৯ মে, ২০২৪

“জ্যামিতির জনক”, প্রাচীন গ্রীক গণিতবিদ ইউক্লিডের নামানুসারে, ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির টেলিস্কোপ ইউক্লিড ৪.৫ মিটার লম্বা আর ৩.১ মিটার ব্যাসযুক্ত। এতে মাত্র দুটো যন্ত্র রয়েছে একটা ছায়াপথগুলোর দূরত্ব ও উজ্জ্বলতা পরিমাপ করার জন্য ব্যবহৃত ইনফ্রারেড ক্যামেরা আর অন্যটা তাদের আকার অধ্যয়নের জন্য দৃশ্যমান-আলো ক্যামেরা। ইউক্লিড স্পেস টেলিস্কোপ তার প্রথম বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ জানিয়েছে। এই স্পেস টেলিস্কোপ মহাবিশ্বের দুই রহস্যের সম্পর্কে সূত্র খুঁজছে – ডার্ক ম্যাটার ও ডার্ক এনার্জি। মহাবিশ্বের আনুমানিক ৯৫% জুড়ে থাকলেও, ডার্ক ম্যাটার ও ডার্ক এনার্জি সরাসরি শনাক্ত করা যায় না। পরিবর্তে, বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্ব জুড়ে অনেক গ্যালাক্সিতে দেখা মহাকর্ষীয় বিক্ষেপ থেকে তাদের পর্যবেক্ষণ করেন।

ডার্ক ম্যাটার মহাবিশ্বের বস্তুর ৮৫% জুড়ে থাকলেও এর সাথে আলোর কোনো সম্পর্ক নেই, এটা সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য। ডার্ক ম্যাটারের অস্তিত্ব বোঝা যায় এর সাথে পারিপার্শ্বিক মহাকর্ষীয় মিথস্ক্রিয়ায় ছায়াপথগুলোর যখন চরম মাধ্যাকর্ষণীয় বিক্ষেপ হয়। অথবা যখন গ্যালাকটিক কেন্দ্রগুলো প্রদক্ষিণ করার সময় তারাগুলোর গতি প্রচণ্ড পরিমাণে ত্বরান্বিত হয়। ডার্ক এনার্জি হল মহাবিশ্বের “অভিকর্ষ-বিরোধী” বল, যা নেতিবাচক চাপ প্রদান করে মহাবিশ্বকে পূর্ণ করে এবং স্থানকাল প্রসারিত করে। মহাকর্ষের জন্য যেমন মহাজাগতিক বস্তুগুলো একত্রিত হয়, এই ডার্ক এনার্জি মহাজাগতিক বস্তুদের একত্রিত করার পরিবর্তে ক্রমবর্ধমান দ্রুত গতিতে আলাদা করে দেয়।
ইউক্লিড টেলিস্কোপ বিভিন্ন গ্যালাক্সির চিত্র পাঠিয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল পৃথিবী থেকে ২.৭ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে ক্লাস্টারের চিত্র, যা ৫০০০০ টারও বেশি ছায়াপথকে ঘিরে রয়েছে। অন্যটা হল পৃথিবী থেকে ১৩০০ আলোকবর্ষ দূরে কালপুরুষ নক্ষত্রমণ্ডলীতে অবস্থিত মেসিয়ার ৭৮-এর গভীরতম চিত্র, এটা এমন এক নার্সারি যেখানে তারার জন্ম হয়। ছবিতে দেখা গেছে তারাগুলো নীলাভ কেন্দ্রে গঠনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। লক্ষ লক্ষ বছর ধরে তারারা সেখানকার বেগুনি এবং কমলা মেঘ থেকে বেরিয়ে আসে।

 

ছবি সৌজন্যেঃ নাসা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seventeen + eighteen =