ভাসমান সৌর প্যানেল সমগ্র দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে সক্ষম

ভাসমান সৌর প্যানেল সমগ্র দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে সক্ষম

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৭ জুন, ২০২৪

জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমলে যেমন পরিবেশ দূষণ কমবে তেমন এই সীমিত শক্তির ভাণ্ডার ব্যবহারও কম হবে। ব্যাঙ্গর এবং ল্যাঙ্কাস্টার ইউনিভার্সিটি এবং ইউকে সেন্টার ফর ইকোলজি অ্যান্ড হাইড্রোলজির গবেষকরা নানা অবস্থানের জলবায়ু ডেটা ব্যবহার করে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৬৮০০০ হ্রদ এবং জলাধারে ভাসমান ফটোভোলটাইক্স (FPVs) এর দৈনিক বৈদ্যুতিক আউটপুট গণনা করেছেন। তারা এমন হ্রদ ও জলাধারগুলো অন্তর্ভুক্ত করেছেন যেখানে ভাসমান সৌর প্রযুক্তি ইনস্টল করার সম্ভাবনা বেশি। এই হ্রদগুলো কোনও সুরক্ষিত এলাকা অবস্থিত নয়, জনসংখ্যার কেন্দ্র থেকে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত, শুকনো নয়, আর প্রতি বছর ছয় মাসের কম সময় জমে বরফ হয়ে থাকে। উচ্চতা, অক্ষাংশ এবং ঋতুর উপর নির্ভর করে আউটপুট ওঠানামা ধরলে, এই হ্রদে FPV থেকে সম্ভাব্য বার্ষিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ১৩০২ টেরাওয়াট ঘন্টা (TWh) পাওয়া যেতে পারে, যা যুক্তরাজ্যের মোট বার্ষিক বিদ্যুতের চাহিদার প্রায় চারগুণ। গবেষণার ফলাফল নেচার ওয়াটারে প্রকাশিত হয়েছে।
মাটিতে সৌর প্যানেল ইনস্টলেশনের তুলনায় জলে ভাসমান সৌর প্যানেলগুলোর অতিরিক্ত সুবিধা রয়েছে প্রথমত নানা ব্যবহারের জন্য জমি খালি থাকে, প্যানেলগুলো ঠান্ডা থাকে তাতে প্যানেল আরও কার্যকরী থাকে। হ্রদের পৃষ্ঠে থাকার জন্য সূর্য ও বাতাস থেকে জলের বাষ্পীভবন রোধ করে। আলো সীমিত হওয়াতে আর পুষ্টি সঞ্চালন ব্যাহত করে শ্যাওলা রোধ করে। তবে গবেষকদের মতে FPV-এর সামগ্রিক পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন। ব্যাঙ্গর ইউনিভার্সিটির ডক্টর ইস্টিন উলওয়ে বলেছেন, তারা এখনও নিশ্চিত নন কিভাবে ভাসমান প্যানেলগুলি বিভিন্ন পরিস্থিতিতে এবং অবস্থানে হ্রদের ইকোসিস্টেমকে প্রভাবিত করতে পারে৷ তারা জানিয়েছেন পরিসংখ্যান অনুযায়ী পাপুয়া নিউ গিনি, ইথিওপিয়া এবং রুয়ান্ডার সম্পূর্ণ বিদ্যুতের চাহিদা এর থেকে পূরণ হতে বলিভিয়া ও টোঙ্গায় যথাক্রমে ৮৭% ও ৯২% পূরণ হবে। আফ্রিকা, ক্যারিবিয়ান, দক্ষিণ আমেরিকা এবং মধ্য এশিয়ার বার্ষিক বিদ্যুতের চাহিদার ৪০% থেকে ৭০% এই প্যানেলের মাধ্যমে পূরণ হতে পারে। তবে ইউরোপে মোট বিদ্যুতের চাহিদার ১% পূরণ হবে। ল্যাঙ্কাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অ্যালোনা আর্মস্ট্রং বলেছেন, এই ভাসমান সৌর প্যানেল যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক, কিন্তু শক্তি নিরাপত্তা, প্রকৃতি এবং সমাজের পরিণতি বিবেচনা করে স্থাপনাগুলো কৌশলপূর্বক হতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × 2 =