বার্ড ফ্লু মহামারী রুখতে বিজ্ঞানীরা ভ্যাকসিন প্রস্তুত করছেন

বার্ড ফ্লু মহামারী রুখতে বিজ্ঞানীরা ভ্যাকসিন প্রস্তুত করছেন

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৯ জুন, ২০২৪

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সাম্প্রতিককালে প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে বার্ড ফ্লু সংক্রমণের ঘটনায় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা উদ্বিগ্ন যে ভাইরাসটি মানুষ থেকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও এখনও অবধি, এমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে সংক্রমণ ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে, তবে মানুষের সুরক্ষার্থে নতুন ভ্যাকসিন তৈরির কাজ চলছে। জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজিস্ট ফ্লাভিও ফ্যাসিন এবং ড্যানিয়েল পেরেজ, বর্তমান বার্ড ফ্লু ভেরিয়েন্টের কারণে নতুন মহামারীর সম্ভাবনা বিশ্লেষণের প্রচেষ্টা করেছেন এবং তাদের মতে এই ভাইরাসের বিস্তারের বিরুদ্ধে টিকাই প্রাথমিক প্রতিরক্ষা হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। যতক্ষণ না বার্ড ফ্লু সরাসরি একজন মানুষ থেকে অন্য মানুষে সংক্রামিত হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত ভ্যাকসিন ব্যাপক আকারে উত্পাদিত হবে না, তবে বিজ্ঞানীরা সুরক্ষার কারণে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ আরও নিখুঁত করতে ব্যস্ত যা প্রয়োজন হলে ব্যবহার করা যেতে পারে। গবেষণাপত্রে বিজ্ঞানীরা বলেন যে মহামারীর প্রস্তুতিকরণ হিসেবে বিভিন্ন পরিসরের ভ্যাকসিন প্ল্যাটফর্মের অন্বেষণ এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি কমানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফ্যাসিন এবং পেরেজ ইনঅ্যাক্টিভেটেড ভ্যাকসিন যা ভাইরাসের মৃত সংস্করণ ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে তার দিকে নজর দিয়েছেন। H5N1 ভাইরাস দ্বারা সংক্রামিত ইঁদুরের উপর করা পরীক্ষায় এই ভ্যাকসিন অনেক বেশি সুরক্ষা প্রদান করে বলে প্রমাণিত হয়েছে।
তাছাড়াও, আর এক ধরনের ভ্যাকসিন- লাইভ অ্যাটেনুয়েটেড ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন (LAIVs), এক দুর্বল ধরনের ভাইরাস ব্যবহার করে শরীরকে আরও ক্ষতিকারক ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য প্রস্তুত করে। এই ভ্যাকসিন সাধারণত আরও ব্যাপক প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে। গবেষকের দল নতুন ধরনের ভ্যাকসিন প্রযুক্তির দিকেও নজর দিয়েছে। যেমন- ভাইরাস-লাইক পার্টিকেল বা ভিএলপি ভ্যাকসিন যা ভাইরাস এবং সেইসাথে মেসেঞ্জার আরএনএ-এর অনুকরণ করে, এবং কোশকে এমন প্রোটিন তৈরি করতে নির্দেশ দেয় যা টার্গেট করা ভাইরাসের সাথে মেলে। এই গবেষণার প্রাথমিক ফলাফল উত্সাহব্যঞ্জক, এবং ইতিমধ্যে মানব অংশগ্রহণকারীদের সাথে সীমিতভাবে পরীক্ষা করা হয়েছে।
এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের H5N1, H7N9, এবং H9N2 উপপ্রকারগুলো একটি দ্বৈত হুমকির সৃষ্টি করে। শুধুমাত্র বৈশ্বিক পোল্ট্রি শিল্পের জন্য উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক ক্ষতিই ঘটায় না বরং মানুষের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও একটি চাপ সৃষ্টি করে। সুতরাং এই ভাইরাস প্রতিরোধ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণাটি হিউম্যান ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনোথেরাপিউটিকসে প্রকাশিত হয়েছে।