শব্দাসুরের হাত থেকে রেহাই নেই জীবজন্তুরও

শব্দাসুরের হাত থেকে রেহাই নেই জীবজন্তুরও

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৯ জুন, ২০২৪

শীতের মরসুমে আমরা প্রায়শই জঙ্গলে পিকনিক করতে বা ঘুরতে যাই। আমরা নিজেরা শান্তির খোঁজে জঙ্গলে গেলেও দুর্ভাগ্যবশত আমরা আমাদের কোলাহল সঙ্গে নিয়ে যাই। এই শব্দদূষণের হাত থেকে রেহাই নেই বিভিন্ন জীবজন্তু, পশুপাখিদের। ইউএসডিএ ফরেস্ট সার্ভিস রকি মাউন্টেন রিসার্চ স্টেশনের বিজ্ঞানীদের নেতৃত্বে কারেন্ট বায়োলজি জার্নালে প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক গবেষণা সেই কথাই প্রকাশ করেছে। আমাদের শব্দদূষণের জেরে প্রাণীজগতে একটা ভয়ের সঞ্চার হয়, তারা পালাতে থাকে যেন কোনো শিকারী তাদের তাড়া করেছে। গবেষকদের মতে মানুষের বিনোদনের কারণে শব্দদূষণ আর সেই শব্দে বন্যপ্রাণীর প্রতিক্রিয়া প্রায়শই লোকচক্ষুর আড়ালে ঘটে। এই অধ্যয়নটি প্রথম মানুষের বিনোদনের ধরন, দলের আকার, তাদের কণ্ঠস্বর এবং বন্যপ্রাণীর প্রতিক্রিয়ার পরিমাণ নির্ধারণ করে। এই ধরনের তথ্য সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনার সাথে বিনোদনের সুযোগের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে কারণ বর্তমান পরিস্থিতিতে খোলা পরিবেশে এসে আনন্দ করা বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। গবেষণায় দেখা গেছে বিনোদনের আওয়াজে বন্যপ্রাণীদের পালানোর সম্ভাবনা ৩.১ থেকে ৪.৭ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং প্রাকৃতিক শব্দের তুলনায় মানুষের বিনোদনের শব্দের সংস্পর্শে এলে জীবজন্তুরা প্রায় তিন গুণ বেশি সময় ধরে সতর্কতামূলক আচরণ প্রদর্শন করে। গবেষণায় আরও দেখা গেছে বিনোদনের আওয়াজের পরের সপ্তাহগুলোতে সেই অঞ্চলে বন্যপ্রাণীর প্রাচুর্য প্রায় ১.৫ গুণ হ্রাস পায়। যে সব অঞ্চলে বড়ো বড়ো দলে পর্যটক যায় বা যেখানে প্রচণ্ড আওয়াজ সহকারে বাইকআরোহীরা যায় সেখানে বন্যপ্রাণীর পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৬ থেকে ৮ গুণ। এই শব্দদূষণে বড়ো বড়ো মাংসাশী প্রাণীরা সবচেয়ে কম প্রভাবিত হয় কিন্তু পাখি, ভাল্লুক বা হরিণের মতো প্রাণীরা সবচেয়ে সংবেদনশীল। তাই শব্দাসুরের হাত থেকে জীবকুল কে রক্ষা করতে আমাদের সচেষ্ট হতে হবে। তা না হলে পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

 

ছবি ঋণ – ইউএসডিএ ফরেস্ট সার্ভিস