শরীরের ঘাম মনিটর করে রোগের সম্ভাবনা জানা সম্ভব

শরীরের ঘাম মনিটর করে রোগের সম্ভাবনা জানা সম্ভব

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৪ জুন, ২০২৪

ঘামে বিভিন্ন বিপাকীয় পদার্থ থাকে যা, রক্তের মতোই শারীরিক অবস্থার সূচক, রক্তের জন্য শরীরে সূচ ফোটাতে হয়, কিন্তু ঘামের ক্ষেত্রে তার প্রয়োজন পড়েনা। ঘামে যেমন ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা থেকে গাউট হওয়ার সম্ভাবনা বোঝা যায়, তেমন গ্লুকোজের মাত্রা থেকে ডায়াবেটিস, ল্যাক্টিক অ্যাসিডের মাত্রা থেকে শারীরিক পরিশ্রমের তীব্রতা বোঝা যায়। তবে ঘামে এইসমস্ত রাসায়নিকের পরিমাণ খুব কম থাকায় এগুলো পরিমাপ করা শক্ত, আগে এ নিয়ে নানা সেন্সর তৈরির চেষ্টা হলেও তা বিশেষ সফল হয়নি। কিন্তু ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকরা একটা পরিধানযোগ্য হেলথ মনিটর তৈরি করেছেন, যা শারীরিক অনুশীলনের সময় হওয়া ঘামের গুরুত্বপূর্ণ জৈব রাসায়নিক মাত্রা পরিমাপ করতে সক্ষম। ACS সেন্সর জার্নালে গবেষকরা জানান এই হেলথ মনিটর ব্যবহার করে তারা স্বেচ্ছাসেবকদের গ্লুকোজ, ল্যাকটেট এবং ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা এবং ব্যায়ামের সময় তাদের ঘামের হার সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হন। এই ত্রিমাত্রিক হেলথ মনিটরের তিনটে বায়োসেন্সর নির্দিষ্ট জৈব রাসায়নিক স্তর নির্দেশ করতে রঙ পরিবর্তন করে।
বর্তমানে গবেষকরা যে যন্ত্র তৈরি করেছেন, তাতে খুব সূক্ষ চ্যানেল রয়েছে যা ঘামের হার ও বায়োমার্কারের ঘনত্ব পরিমাপে সক্ষম। বায়োমার্কারের খুব কম ঘনত্ব মাপার জন্য তারা সেলফ সাপোর্টিং মাইক্রোফ্লুইড চ্যানেলগুলো প্রিন্ট করছেন। এর থেকে পাওয়া তথ্যের সাথে ল্যাবের তথ্য মিলিয়ে দেখেছেন, তাদের যন্ত্রের তথ্য সম্পূর্ণ সঠিক। তিনটি বায়োমার্কার মাপা হলেও আরও তথ্যের সংখ্যা বাড়ানো সম্ভব আর এই যন্ত্র ব্যবহার বেশ সহজ। গবেষকদের আশা এই ত্রিমাত্রিক-প্রিন্টেড মনিটর একদিন স্বাস্থ্যের অবস্থা ট্র্যাক করতে পারবে, ডায়াবেটিস, গাউট, কিডনি রোগ বা হৃদরোগের মতো সাধারণ রোগ নির্ণয় করার জন্য এটা একটা সহজ নিরাপদ উপায় হতে পারে। গবেষকরা জানিয়েছেন, এই যন্ত্রের ডিজাইন উন্নত করতে তারা আরও কাজ করবেন, আর বাণিজ্যিকীকরণের জন্য চেষ্টা চালাবেন।