নগদহীন লেনদেন আমাদের খরচের আচরণে পরিবর্তন আনছে – জানাচ্ছে গবেষণা

নগদহীন লেনদেন আমাদের খরচের আচরণে পরিবর্তন আনছে – জানাচ্ছে গবেষণা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৩০ জুন, ২০২৪

মানুষের মানসিকতার মধ্যে প্রযুক্তির প্রভাব বেড়েছে। তাই নগদহীন লেনদেন ক্রমশ বেড়ে চলেছে। ২০১৬ সালে ভারতীয় অর্থব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসে। তার পর থেকেই বাড়ে ডিজিটাল লেনদেন। কিউআর কোড স্ক্যান করে অথবা নির্দিষ্ট ইউপিআই আইডির মাধ্যমে এক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকার লেনদেন শুরু হয়। গুগলপে, ফোনপে, পেটিএম প্রভৃতি ইউপিআই অ্যাপের ব্যবহারও রমরমিয়ে বাড়তে থাকে সে সময় থেকেই। আজ আমরা ছোটোখাটো যে কোনো জিনিস কিনতে নগদহীন লেনদেন ব্যবস্থার ওপরই বেশি ভরসা করি। কিন্তু এক নতুন সমীক্ষা জানাচ্ছে নগদহীন লেনদেন আমাদেরকে আগের চেয়েও বেশি ব্যয় করতে বাধ্য করছে। অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড ইউনিভার্সিটি এবং মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটির একটি দল ১৭টি দেশে ব্যয়ের তথ্যর ভিত্তিতে ৭১টি পূর্বে প্রকাশিত গবেষণাপত্রের একটি বিশ্লেষণ করেছে। তাদের বিশ্লেষণ অনুসারে ফোনে বোতাম টিপে বা কার্ড স্ক্র্যাচ করে জিনিসপত্র কেনাকাটির ফলে বাজেটের তোয়াক্কা না করে আমরা লাগামছাড়া কেনাকাটি করে ফেলছি। সম্ভবত এর কারণ হল আমরা হাতে করে টাকা বা পয়সা গুনে খরচ করছি না ফলত আমরা কতটা ব্যয় করছি তা হাতেনাতে উপলব্ধি করছি না। অ্যাডিলেড ইউনিভার্সিটির মার্কেটিং গবেষক ল্যাচলান স্কোমবার্গ বলেছেন পরিকল্পনার চেয়ে বেশি খরচ রোধ করতে, কার্ডের পরিবর্তে নগদ টাকা ব্যবহার করা বেশি ভালো কারণ এটি একটি আত্ম-নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি হিসাবে কাজ করে। নগদ অর্থ ব্যবহার করার সময়, আমরা নিজেরা আঙুলে করে নোট গুনে টাকা এবং কয়েন হস্তান্তর করি। যদি হাতেনাতে কিছু হস্তান্তর করা না হয়, তাহলে কত খরচ হয়েছে তার ট্র্যাক হারানো সহজ। যথাযথ পরিকল্পনা ছাড়াই নগদহীন লেনদেন লাগামছাড়া কেনাকাটায় ইন্ধন জোগাতে পারে। এই ব্যবস্থায় সহজে কেনাকাটা করা যায় বলে ক্রেতার পছন্দের তালিকাও লম্বা হয়। একটি নগদহীন লেনদেন করা সমাজের দিকে আমরা ধীরে ধীরে এগিয়ে চলেছি। এই গবেষণাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি এই পরিবর্তনের একটি উপেক্ষিত দিকের উপর আলোকপাত করে- কীভাবে অর্থিক লেনদেন পদ্ধতি আমাদের ব্যয়ের আচরণকে প্রভাবিত করে। সুতরাং নগদহীন লেনদেন করলেও আরও সচেতনভাবে ক্রয় সিদ্ধান্ত নিতে হবে।