যোনিপথের ব্যাক্টিরিয়া এইচআইভি-র ওষুধের উপর প্রভাব ফেলতে সক্ষম। এইচআইভি সংক্রমণ মোকাবিলাতেও যেমন সাহায্য করে এই অণুজীব, তেমনই ওষুধকে নিষ্ক্রিয় করার ক্ষমতাও তারা রাখে। নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর এমনই তথ্য।
টেনোফয়ভার নামক অ্যান্টিরিট্রোভিয়াল ওষুধের উপস্থিতি থাকে কৃত্রিম ভ্যাজাইনাল জেলে। যেসব মহিলার যোনিপথে রয়েছে ব্যাক্টিরিয়া কলোনি, তাদের ক্ষেত্রে এই টেনোফয়ভার তিন গুণ বেশি কার্যকরী।
এইচআইভি সংক্রমণ আটকাতে অনেক মহিলা যৌনমিলনের আগে ও পরে স্বাস্থ্যসম্মত ভ্যাজাইনাল জেল ব্যবহার করেন। কিন্তু কীভাবে কাজ করে এইসব জেল? গবেষকদের ধন্দে ফেলেছিল জেল ব্যবহারের বিমিশ্র ফল। কিন্তু ক্যানাডার পাবলিক হেলথ এজেন্সির অণুজীববিজ্ঞানী অ্যাডাম বার্গেনার এই ফলাফলের সম্ভাব্য বায়োলজিক্যাল ব্যাখ্যা খুঁজতে নামেন ।
যোনিপথের অণুজীব কলোনিতে প্রধান সদস্য ল্যাক্টোব্যাসিলাস ব্যাক্টিরিয়া। এই ব্যাক্টিরিয়া ল্যাক্টিক অ্যাসিড তৈরি করে যোনিপথের অম্লমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ফলে, সম্ভাব্য প্যাথোজেনিক অরগ্যানিসমের পক্ষে ভ্যাজাইনাল ক্যানেলে টিকে থাকা অসুবিধেজনক হয়ে পড়ে, এমনই মত জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটি অফ মেডিসিনের গবেষক খালিল ঘানেমের।
যোনিপথের মাইক্রোবায়োটা কীভাবে টেনোফয়ভারের কাজে প্রভাব ফেলে, বার্গেনার ও তাঁর সহকর্মীরা দক্ষিণ আফ্রিকার মহিলাদের উপর পরীক্ষা চালিয়ে বুঝতে চেয়েছিলেন। ফলাফল খুবই আশাব্যঞ্জক- প্রায় ৩৯% এইচআইভি সংক্রমণ কমেছে। গবেষণাবিষয়ক সংখ্যাতত্ত্ব বলছে, মোট ৬৮৮ নমুনার মধ্যে ৪০০টি নমুনায় প্রধানত ল্যাক্টোব্যাসিলাস প্রজাতির ব্যাক্টিরিয়া এবং অপর ২৮১টি নমুনায় অন্য প্রজাতির আধিক্য ( যেমন-Garnerella vaginalis ) । সংগৃহীত তথ্য দেখে বার্গেনার জানাচ্ছেন,“ল্যাক্টোব্যাসিলাসের উপস্থিতি, ঔষধি গুণসম্পন্ন জেলের চেয়ে তিনগুণ বেশি সুরক্ষা দিতে সক্ষম”।
ওষুধের বিপাকক্রিয়াতেও অণুঘটকের ভূমিকা নেয় যোনিস্থিত ব্যাক্টিরিয়া, সুসান টাডেনহামের বক্তব্য এমনই। হয়তো এই অণুজীবের অদ্ভুতুড়ে কার্যকলাপের ফলেই অনেক মহিলা ওষুধের কোর্স সম্পূর্ণ করেও আশানুরূপ ফলাফল পাননি।