ইঁদুরদের ওপর চালানো নতুন পরীক্ষা থেকে বেরিয়ে এল তথ্য। টাইপ ২ ডায়াবেটিস সংক্রামক হতে পারে, জানাচ্ছেন গবেষকরা। দূষিত প্যাংক্রিয়াস-প্রোটিন প্রাণীদেহের অন্য প্রোটিনকেও দূষিত করে, ফলে এটি একইসাথে প্রিয়োন রোগ এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস সৃষ্টি করতে সক্ষম। কোশ থেকে কোশে- এমনকি এক দেহ থেকে অন্য দেহে- প্রোটিন মারফৎ রোগগুলি সংক্রামিত হতে পারে। আপাতদৃষ্টিতে ভিন্ন, টাইপ-২ ডায়াবেটিস ও প্রিয়োন রোগের মধ্যে মিল হল- এদুটিরই কারণ জমাট বেঁধে যাওয়া মিসফোল্ডেড প্রোটিন।
পরীক্ষা চলাকালীন দূষিত প্যাংক্রিয়াস-প্রোটিন ডায়াবেটিস-মুক্ত ইঁদুরদের দেহে ঢোকানো হলে তাদের মধ্যে এই রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। দ্রুত বেড়ে যায় ব্লাড শুগারের মাত্রা। ১ অগাস্ট তারিখে ‘জার্নাল অব এক্সপেরিমেন্টাল মেডিসিন’-এ গবেষকরা খবরটি প্রকাশ করেছেন।
‘এটি খুবই চিত্তাকর্ষক’, ভ্যাঙ্কুভারের ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলম্বিয়া-র ডায়াবেটিস-গবেষক ব্রুস ভারচেরে জানানঃ ‘দূষিত প্রোটিন যেভাবে এক লাফে অনাক্রান্ত ইঁদুরদের মধ্যে প্রক্রিয়াটি শুরু করে দিয়েছে।’ প্যাংক্রিয়াসের বিটা কোশ যেমন শর্করা প্রস্তুতকারক হরমোন ইনসুলিন বানায়, তেমনই এই কোষ থেকে তৈরী হয় অন্য একটি প্রোটিনঘটিত হরমোন IAPP (আইলেট অ্যামাইলয়েড পলিপেপটাইড)। বেশিরভাগ মানুষেরই টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগটি শুরু হয় প্যাংক্রিয়াসে উৎপন্ন IAPP বেড়ে গেলে। অ্যালঝাইমার্স, পারকিনসন ও অন্যান্য প্রায়োন রোগেরও একটি অন্যতম কারণ প্রাণীদেহে মিসফোল্ডেড প্রোটিন বেড়ে যাওয়া।
একটি গবেষক দল পরিকল্পনা করছে এক বৃহত্তর পরীক্ষার। IAPP নামক হরমোনটি রক্ত পরিবহনের মতো কোনো বাস্তব অবস্থাতেও ছড়িয়ে পড়ে কিনা, তারা যাচাই করে দেখছে। আপাতত ইঁদুরদের নিয়ে চলবে পরীক্ষা – ডায়াবেটিস আক্রান্ত ইঁদুরদের রক্ত অনাক্রান্ত ইঁদুরদের দেওয়া হলে রোগ ছড়িয়ে পড়ে কিনা -খতিয়ে দেখবে গবেষক দল। রোগটি কতদূর সংক্রামক, জানা যাবে পরীক্ষাটি থেকে।