৫০ কোটি মানুষ জলসঙ্কটে ভুগবেন

৫০ কোটি মানুষ জলসঙ্কটে ভুগবেন

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৭ জুলাই, ২০২৪
জলসঙ্কট

একেবারে হৈ হৈ পরে যায় মাঝে মধ্যে – সংকট যখন নিজের দোরের কড়া নাড়ে। ঠাণ্ডা ঘরে বসে, তাপপ্রবাহ নিয়ে কত আলোচনা, কত বৈঠক! খবরের কাগজে নিয়মিত কলম থাকে জলবায়ু পরিবর্তন ঘিরে। কিন্তু ঐ টুকুই। তাতে যতক্ষণ না আমার গায়ে ছ্যাঁকা লাগছে, আমারা কেউই নড়ে বসবো না।

একের পর এক গবেষণা কপালে ভাঁজ ফেলার মতো। কিন্তু শুনছে কে? তা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেনই বা কজন! প্রতি চারজন মানুষের মধ্যে একজন বেঁচে থাকার জন্য মাটির নীচের জলের ওপর নির্ভর করে। নেচার জিয়োসায়েন্সে প্রকাশিত এক গবেষণা বলছে, এই শতাব্দীর শেষদিকে, কয়েক কোটি মানুষ জলের এই সরবরাহ হয়তো আর পাবেনা। কারণ তাপমাত্রা যে ভাবে বাড়ছে, তাতে অগভীর ভূগর্ভস্থ জলের সরবরাহকে বিষাক্ত জলে পরিণত করতে পারে।
গবেষকদের আন্তর্জাতিক দল একটি বিশ্ব-স্কেল মডেল তৈরি করেছেন। বিভিন্ন উষ্ণতা পরিস্থিতির সাপেক্ষে, বিশ্বজুড়ে ভূগর্ভস্থ জলের উৎসের তাপমাত্রা পরিবর্তনের ফল দেখাবে এই স্কেল। আর তাতেই দেখা যাচ্ছে, ২১০০ সাল নাগাদ প্রায় ৫৯০ মিলিয়ন মানুষ এমন জলের উৎসের ওপর নির্ভরশীল হবেন, যাতে পানীয় জলের ন্যূনতম গুণগত মান থাকবেনা।
মাটির নীচের স্তর সমুদ্রের মতো গরম শোষণ করতে পারেনা। তাহলে কী হবে? মাটির নীচের জল গরম হতে থাকবে। জলের পরিমাণ কমবে। কম বৃষ্টিতে জলের আধারগুলো পূর্ণ হবেনা। আর মাটির স্তরের ছিদ্র দিয়ে দ্রাব্য খনিজ, দূষক, নানা প্যাথোজেন প্রবেশ করতে থাকবে। জলের এই আধার আর এক থেকে দু ডিগ্রি গরম হলেই বিপদ তুঙ্গে। অক্সিজেন কমবে। বিপজ্জনক ব্যাকটেরিয়া বাড়বে। আর্সেনিক বা ম্যাঙ্গানিজের মতো ভারী বিষাক্ত ধাতু জলে মিশতে থাকবে। তবে জলস্তর যেখানে বেশ গভীর যেমন আন্দিজ, রকি পর্বতমালা, সেখানে জল দীর্ঘকাল ঠান্ডা থাকায়, নিরাপদ থাকবে। কিন্তু অগভীর অঞ্চলের জল বা তাপমাত্রায় উষ্ণতার হার খুব বেশি, জায়গাগুলিতে মানুষদের ভূগর্ভস্থ জলের তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে মোকাবিলা করতে হবে। দেখা যাচ্ছে গরম দেশের মানুষরাই এতে বেশি বিপদে পড়বেন। কার এলাকায় আনুমানিক কি পরিবর্তন আসতে পারে, তা খুঁজে দেখতে পারেন।এর জন্য এই দল একটা ইন্টার‍্যাক্টিভ গুগল আর্থ ইঞ্জিন অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করেছে।