সুপারবাগের সংক্রমণে কাবু মানুষ 

সুপারবাগের সংক্রমণে কাবু মানুষ 

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৬ আগষ্ট, ২০২৪
সুপারবাগ
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) একটি নতুন প্রতিবেদনে ঘোষণা করেছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ ১৬টি দেশে “হাইপারভাইরুলেন্ট” সুপারবাগের বিপজ্জনক নতুন স্ট্রেন পাওয়া গেছে। সুপারবাগ এমন এক ব্যাকটেরিয়ার স্ট্রেন যা বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী। এমন মারাত্মক প্রাণঘাতী ব্যাকটিরিয়ার সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে, যেগুলোর   প্রতিরোধে কোনও অ্যান্টিবায়োটিক আর কাজ দিচ্ছে না। হাইপারভাইরুলেন্ট ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়া (এইচভিকেপি) এমনই এক সুপারবাগ। এই ব্যাকটেরিয়া দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরা মারাত্মক সংক্রমণ ঘটাতে পারে। যাদের সুস্থ স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে তাদেরও এরা আক্রমণ করে কাবু করে ফেলছে।
সাধারণত, কে. নিউমোনিয়া আমাদের আশপাশের পরিবেশেই পাওয়া যায়। মাটিতে, জলে আবার বিভিন্ন প্রাণী বা মানুষের  শরীরে, তাদের গলার উপরের দিকে বা খাদ্যনালীতে। এই ধরনের জীবাণু স্বাস্থ্যক্ষেত্রে একটি বড়ো সমস্যা। এরা চিকিৎসা সরঞ্জামকে দূষিত করতে পারে আবার সংক্রমণের কারণও হতে পারে। বিশেষ করে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল। নিউমোনিয়া, মূত্রনালীর সংক্রমণ, রক্ত প্রবাহের সংক্রমণ অথবা স্নায়ুতন্ত্রের সংক্রমণ ঘটাতে পারে এই ব্যাকটেরিয়া।  প্রথমদিকে অ্যান্টিবায়োটিক অ্যাম্পিসিলিনের প্রতি এরা সহজাতভাবে প্রতিরোধী হলেও সম্প্রতি আরও বেশি সংখ্যক ওষুধের বিরুদ্ধে এরা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। কে নিউমোনিয়ার এই নতুন, “হাইপারভাইরুলেন্ট” স্টেন হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বাস্থ্যকর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের মধ্যেও এরা মারাত্মক সংক্রমণ ঘটাতে পারে। গবেষণা অনুসারে, সংক্রমণ খুব দ্রুত ছড়িয়ে যায়, জটিলতা ও মৃত্যুর হারও বেশি। ১৯৮০ সালে এইচভিকেপি স্ট্রেন প্রাথমিকভাবে এশিয়ায় আবিষ্কৃত হয়েছিল। তখন অবধি এই ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করত। ধীরে ধীরে স্ট্রেনগুলো বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরানো এবং নতুন উভয় শ্রেণীর অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী হয়ে ওঠে। বিশেষ করে, কিছু স্ট্রেন এক শ্রেণীর অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী যা প্রায়শই ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের চিকিত্সার জন্য ব্যবহৃত এবং যা অন্যান্য একাধিক ওষুধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাই সন্ত্রস্ত । হাইপারভাইরুলেন্স এবং অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের ফলে কমিউনিটি এবং হাসপাতাল  উভয় স্তরেই এই স্ট্রেন ঝুঁকির কারণ হয়ে উঠেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × one =