প্রাচীন মিশরীয় কবরে গুপ্তধনের সন্ধান

প্রাচীন মিশরীয় কবরে গুপ্তধনের সন্ধান

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৬ আগষ্ট, ২০২৪
গুপ্তধনের-সন্ধান

মিশর- এই নাম শুনলেই আমাদের মনে পড়ে যায় মমি আর পিরামিডের সংস্কৃতির কথা। বিভিন্ন ফারাওদের পিরামিড, তাকে ঘিরে নানা লোককথা, ঐতিহাসিক বিষয় উঠে আসে। প্রাচীন মিশরীয় নেক্রোপলিস তেল এল-দেইর ডেমিয়েটাতে আশ্চর্যজনক এক আবিষ্কার হয়েছে। খননের ফলে এখানে কয়েক ডজন কবর পাওয়া গেছে যা হাজার হাজার বছর ধরে মানুষের নজরে আসেনি। তেল এল-দেইরের প্রত্নতাত্ত্বিক মিশনের খোঁড়াখুঁড়ি বেশ কয়েক বছর ধরে চলছে। এতে ৬৪৪ থেকে ৫২৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে, ২৬তম রাজবংশের নানা ধরনের সমাধি পাওয়া গেছে। ইটের গাঁথনির ঘরে ২৫০০ বছরেরও আগে এই মৃতদেহগুলো সমাধিস্থ করা হয়েছিল। তার সাথে পাওয়া গেছে মূল্যবান নানা ধন-সম্পদ। এই ধন-সম্পদের মধ্যে রয়েছে মৃৎপাত্র, মৃত ব্যক্তিকে পরবর্তী জীবনে রক্ষা করার জন্য তাবিজ, মাদুলি, উশবতী মূর্তি, ব্রোঞ্জ মুদ্রা, এবং সোনার ফয়েলে আইসিস, বাস্টেট, হোরাস এরকম নানা দেবতার ধর্মীয় প্রতীক। পরকালে মৃত ব্যক্তির সেবা করার জন্য মানুষ উশবতী মূর্তি সমাধিতে স্থাপন করত। মানুষের বিশ্বাস ছিল তারা মৃতদের জন্য দাস হিসেবে পরবর্তী জীবনে কায়িক শ্রমের কাজ করে দেবে। এই মূর্তিগুলোর কাঁধে একটা কোদাল আর পিঠে একটা ঝুড়ি থাকত, যাতে বোঝা যায় যে তারা মৃত ব্যক্তির জন্য খামারের কাজ করবে।
কিন্তু মিশরীয় পিরামিডগুলোতে মৃতদেহের সঙ্গে সোনা রূপো নানা মূল্যবান জিনিসই কবর দেওয়া হত, তাহলে এই আবিষ্কারকে কেন আশ্চর্যজনক বলছি? ফারাওদের সময় থেকেই কবরগুলো মূল্যবান জিনিসের জন্য লুটতরাজ করা হত, প্রায় কিছুই পড়ে থাকত না। সেদিক থেকে এই অক্ষত কবর কী করে এতদিন রক্ষা পেল তা বেশ আশ্চর্যজনক। মিশরীয় সুপ্রিম কাউন্সিল অফ অ্যান্টিকুইটিজের মহাসচিব মোহাম্মদ ইসমাইল খালেদের মতে এই অক্ষত কবর প্রাচীন মিশরীয়দের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার রীতি সম্পর্কে নানা দিক উন্মোচন করবে। এই প্রাচীন, আকর্ষণীয় সংস্কৃতির রহস্য উদঘাটিত হতে পারে। ঐতিহাসিকরা পিরামিডের স্থাপত্য বিন্যাস আবিষ্কার করতে বেশ আগ্রহী। প্রাচীন মিশরীয় সময়কালে এই নকশা বেশ সাধারণ। এই আবিষ্কার দামিয়েটা শহরের ঐতিহাসিক তাত্পর্যের ওপর জোর দিচ্ছে।