আমেরিকার হারিকেন ঝড়ের নিয়ন্ত্রক সাহারার ধূলিকণা – গবেষণায় প্রকাশ

আমেরিকার হারিকেন ঝড়ের নিয়ন্ত্রক সাহারার ধূলিকণা – গবেষণায় প্রকাশ

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৮ আগষ্ট, ২০২৪
আমেরিকার হারিকেন ঝড়

পৃথিবীর সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক ঝড়ের অন্যতম হল হারিকেন। আটলান্টিক, উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপকূল বরাবর এই ঝড় দেখা যায়। অপেক্ষাকৃত দুর্বল হারিকেনও ভারী বৃষ্টিপাত এবং শত শত মাইল অভ্যন্তরীণ বন্যা তৈরি করতে পারে। এই ঝড়ে স্থায়ী বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ৭৪ মাইল বা তার বেশি হয়। সায়েন্স অ্যাডভান্সেস-এর গবেষণা জানাচ্ছে আফ্রিকার সাহারা মরুভূমি থেকে পরিবাহিত ধূলিকণা ও মার্কিন উপসাগরীয় উপকূল এবং ফ্লোরিডা বরাবর গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় ও বৃষ্টিপাতের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। সাহারা মরুভূমি থেকে ধূলিকণার বিরাটাকার ধোঁয়া দমকা হাওয়ার আকারে আটলান্টিক সমুদ্রের ওপর হারিকেন গঠন দমন করতে পারে। এতে উত্তর আমেরিকার আবহাওয়া প্রভাবিত হয়। তবে ঘন ধূলিকণা থেকেও ভারী বৃষ্টিপাতর হতে পারে, যার থেকে আরও বেশি ধ্বংস হতে পারে। আগে মনে করা হত হারিকেন বৃষ্টিপাতের পেছনে প্রধান ভূমিকা সমুদ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ও বায়ুমণ্ডলের আর্দ্রতার। স্ট্যানফোর্ড ডোয়ের স্কুল অফ সাসটেনেবিলিটির আর্থ সিস্টেম সায়েন্সের সহকারী অধ্যাপক ইউয়ান ওয়াং-এর মতে এর নিয়ন্ত্রক সাহারার ধূলিকণা। পূর্ববর্তী গবেষণায় দেখা গেছে যে সাহারার থেকে ধুলো পরিবহন আগামী দশকগুলোতে নাটকীয়ভাবে হ্রাস পেতে পারে আর মানব সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হারিকেন বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে।
ধূলিকণা হারিকেনের কেন্দ্রে বরফের মেঘ তৈরি করতে পারে যার থেকে আরও বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে। ধুলো সৌর বিকিরণ রোধ করে ঝড়ের কেন্দ্রস্থলের চারপাশে সমুদ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রাকে শীতল করতে পারে, এতে গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় দুর্বল হয়ে যায়। ওয়াং ও তার সহকর্মীরা ১৯ বছরের আবহাওয়া ও ঘণ্টা পিছু বৃষ্টিপাতের তথ্য নিয়ে তা মেশিন লার্নিং মডেলে ফেলে এদের মধ্যে গাণিতিক ও ভৌত সম্পর্ক দেখেছেন। ডাস্ট অপটিক্যাল গভীরতা, অর্থাৎ ধূলিকণার ধোঁয়া কতটা আলো ফিল্টার করে তা বৃষ্টিপাত নিয়ন্ত্রণ করে। ০.০৩ এবং ০.০৬ ডাস্ট অপটিক্যাল গভীরতায় বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি পায় এবং তারপরে দ্রুত হ্রাস পায় । ধূলিকণার উচ্চ ঘনত্বে, বৃষ্টিপাত কমে যায়। যদি ধূলিকণার ঘনত্ব বেশি হয় তবে এটি সমুদ্রপৃষ্ঠকে সূর্যালোক থেকে রক্ষা করতে পারে আর বৃষ্টিপাত কমায়।