ক্ষতিগ্রস্ত তরুণাস্থি মেরামতে নতুন উপাদান

ক্ষতিগ্রস্ত তরুণাস্থি মেরামতে নতুন উপাদান

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১২ আগষ্ট, ২০২৪
নতুন উপাদান

আমাদের শরীর নিজেকে মেরামত করে নিতে বেশ পটু। কিন্তু অনেকসময় আঘাতের পরে নিজেদের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে শারীরকে বেশ লড়াই করতে হয়। এই ধরনের একটি অংশ হল তরুণাস্থি। নমনীয় অথচ দৃঢ় ধরনের এই যোজক কলা আমাদের হাড়ের একে অপরের সঙ্গে ঘর্ষণ বা ঝাঁকুনি থেকে রক্ষা করে। সময়ের সাথে সাথে, তরুণাস্থির স্বচ্ছ হায়ালিন উপাদান ক্ষয়প্রাপ্ত হতে পারে। ফলে অনেকেই অস্টিওআর্থারাইটিস এবং কন্ড্রোমালেসিয়ার মতো কষ্টদায়ক অসুখে আক্রান্ত হতে পারে। বিজ্ঞানীরা বহু বছর ধরে হায়ালিন কার্টিলেজ বা স্বচ্ছ তরুণাস্থি পুনরুজ্জীবিত করার উপায় নিয়ে গবেষণা চালিয়েছেন। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির নেতৃত্বে গবেষকরা জীবিত ভেড়ার ক্ষতিগ্রস্ত তরুণাস্থিতে বায়োম্যাটেরিয়াল বা জৈবিকউপাদান প্রবেশ করিয়ে দেখেছেন সক্রিয় অস্থিসন্ধিতে তরুণাস্থির পুনঃবৃদ্ধিকে তা সাহায্য করে।
তরুণাস্থি আমাদের জয়েন্টগুলোর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। যখন এগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা সময়ের সাথে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, তখন ব্যক্তিটির সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং চলাফেরার উপর তার প্রভাব পড়ে। কিন্তু সমস্যার বিষয় হল প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে তরুণাস্থি নিরাময়ের সহজাত ক্ষমতা নেই। নতুন এই থেরাপি এমন কলা মেরামত করতে পারে যা স্বাভাবিকভাবে পুনরুজ্জীবিত হয় না। তাই গবেষকদের অনুমান গবেষণার ফলাফল ক্লিনিকাল প্রয়োজন মোকাবেলায় সহায়তা করতে পারে। বর্তমানে তরুণাস্থি ক্ষয় খুব বড়ো একটা স্বাস্থ্য সমস্যা। সমীক্ষায় জানা গেছে প্রতি বছর ১.৩ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ হাঁটু প্রতিস্থাপন করে থাকেন। এদের মধ্যে তরুণাস্থির সমস্যা একটি প্রধান কারণ। তরুণাস্থি মেরামতের ক্ষেত্রে প্রায়শই শক্ত, তন্তুযুক্ত ফাইব্রোকারটিলেজ বৃদ্ধি পায়। গবেষণায় এমন একটি জৈবিক উপাদান গবেষকরা তৈরি করেছেন যা এই কঠিন সমস্যার সমাধান করতে পারে। এই বায়োমেটেরিয়াল, দুটি উপাদান দিয়ে তৈরি। একটি পেপটাইড অণু যা ট্রান্সফর্মিং গ্রোথ ফ্যাক্টর বিটা -১ নামের একটি প্রোটিনের সাথে যুক্ত হয়ে কোশের বৃদ্ধি এবং বিভাজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে হাড় এবং তরুণাস্থির বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে। দ্বিতীয় উপাদানটি হল হায়ালুরোনিক অ্যাসিড। এটি জয়েন্ট এবং তরুণাস্থিতেও পাওয়া যায় এবং লুব্রিকেন্ট হিসাবে কাজ করে এবং ক্ষত নিরাময়ে সাহায্য করে।
গবেষকরা বলেছেন প্রাণীদের নিয়ে আরও গবেষণার পর প্রক্রিয়াটি মানুষের মধ্যে পরীক্ষা করা যেতে পারে। তবে তাদের অনুমান গবেষণাটি ভবিষ্যতে চিকিৎসা ক্ষেত্রে সাফল্য আনতে পারে।