যখন সময় থমকে দাঁড়ায়

যখন সময় থমকে দাঁড়ায়

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২০ আগষ্ট, ২০২৪

মহাকাশযান বোয়িং সিএসটি-১০০ স্টারলাইনার ক্যাপসুলে চড়ে গত ৫ জুন মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার দুই নভশ্চর পাড়ি দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের উদ্দেশে। কমান্ডার ব্যারি উইলমোর এবং পাইলট সুনিতা উইলিয়ামস। প্রথমে কথা ছিল, ২১ দিন পরেই পৃথিবীতে ফিরবেন। কিন্তু আচমকা মহাকাশযানটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ে। রকেটে হিলিয়াম লিকেজ ও থ্রাস্টারের সমস্যা ধরা পড়ে। ফলে নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে ফিরতে পারছেন না সুনীতা ও ব্যারি। আড়াই মাসেরও বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে আটকে রয়েছেন তারা। নাসা জানিয়েছে মহাকাশে দীর্ঘ সময় ধরে থাকলে মাইক্রোগ্র্যাভিটি এবং বিকিরণের মতো নানা ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে শরীরে। সেখানে কোনো মাধ্যাকর্ষণ নেই। তাই বিপরীত পথে অর্থাৎ উপরের দিকে বইতে শুরু করে শরীরের তরল। মুখ ফুলে যায়, নাক বন্ধ হয়ে যায়, পায়ে তরলের অভাব দেখা যায়। পরিবর্তন হয় রক্তচাপের। তাই অনেকদিন ধরে মহাকাশে থাকলে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা শুরু হয়। নাসা জানিয়েছে, তাদের ফিরতে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্তও সময় লেগে যেতে পারে। সব ঠিক থাকলে আগামী বছরের শুরুতেই স্পেস এক্সের ক্রু ড্রাগনে পৃথিবীতে ফিরবেন দুই নভশ্চর। তাই অপেক্ষা করা ছাড়া তাদের কোনো গতি নেই।
আর এই অপেক্ষা আরও কঠিন হয়ে পড়ে কারণ আমাদের সময়ের অনুভূতি দীর্ঘায়িত হয়ে যায়। বিলম্ব এবং প্রত্যাশার সময়কাল যেন শেষ হতে চায় না। অপেক্ষা আমাদের সময় সম্পর্কে ধারণাকে ধীর করে দেয়। আমরা সময় সম্পর্কে চিন্তা করতে করতে বড়ো উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি। দৈনন্দিন জীবনে কাজের ক্ষেত্রে আমরা সময়কে উপেক্ষা করে কাজ করি। কাজের মধ্যে দিয়ে সময় কীভাবে বয়ে যায় বোঝাই যায় না। কিন্তু যখন আমরা কোনো কিছুর জন্য অপেক্ষা করি তখন মনে হয় ঘড়ির কাঁটা যেন খুব ধীর লয়ে চলছে। মানসিক চাপ, অস্বস্তি এবং ব্যথার অনুভূতি এই প্রভাবকে আরও বাড়িয়ে তোলে। ফলে কঠিন পরিস্থিতিতে অপেক্ষা করা আরও দীর্ঘ বলে মনে হতে পারে। স্পেস স্টেশনে আটকে থাকা মহাকাশচারীদের জন্য, তাদের বাড়ি ফেরার উদ্বেগ, কাজকর্ম এবং বন্ধু বা পরিবারের সাথে যোগাযোগ করার সীমিত সুযোগ সবকিছু মিলিয়ে তাদের বাড়ি ফেরার অপেক্ষা ছয় মাসেরও অনেক বেশি বলে অনুভূত হবে।