চুলের চেয়েও সূক্ষ ন্যানোপ্লাস্টিক, যা খালি চোখে দেখাই যায়না, বর্তমানে মানব স্বাস্থ্যের পক্ষে মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। আমাদের অলক্ষে বিশ্বের জলাশয়ে এদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এর থেকে কার্ডিওভাসকুলার, শ্বাসযন্ত্রের রোগে আমরা আক্রান্ত হচ্ছি। সুস্থভাবে বাঁচার জন্য ন্যানোপ্লাস্টিক থেকে পরিত্রাণ পেতে একটা সমাধান খুঁজে পাওয়া জরুরি। বিভিন্ন গবেষক জল থেকে ন্যানোপ্লাস্টিক সরানোর জন্য নানা পদ্ধতি উদ্ভাবন করে চলেছেন। সম্প্রতি, মিসৌরি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা একটা তরলের মাধ্যমে ন্যানোপ্লাস্টিক অপসারণের কথা জানিয়েছেন। এটা জল থেকে মাইক্রোস্কোপিক প্লাস্টিকের কণাগুলোকে ৯৮% এরও বেশি নির্মূল করেছে। এই গবেষণা ACS অ্যাপ্লাইড ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যাটেরিয়ালস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
ন্যানোপ্লাস্টিক জলজ বাস্তুতন্ত্রকে ব্যাহত করতে পারে, খাদ্য শৃঙ্খলে প্রবেশ করতে পারে, যা অন্যান্য প্রাণী ও মানুষ উভয়ের জন্যই ঝুঁকিজনক। গবেষকরা জানিয়েছেন, তারা জল থেকে ন্যানোপ্লাস্টিকের মতো দূষিত পদার্থ অপসারণের জন্য ভাল উপায় খুঁজে পেয়েছেন। গবেষকদের উদ্ভাবনী পদ্ধতিতে প্রাকৃতিক উপাদান থেকে তৈরি জল বিকর্ষণ করছে এমন দ্রাবক ব্যবহার করে হয়েছে। এই ধরনের দ্রাবক স্বল্প পরিমাণে ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণে জল থেকে ন্যানোপ্লাস্টিক আলাদা করা গেছে। এটা ন্যানোপ্লাস্টিক দূষণের যেমন সমাধান দেয় তেমন জল বিশুদ্ধকরণ প্রযুক্তিকে আরও উন্নয়নের দিকে নিয়ে যেতে পারে। গবেষণায় ব্যবহৃত দ্রাবক জলের উপরিভাগে ভাসে যেভাবে তেল জলে ভাসে। একবার জলের সাথে মিশে যাওয়ার পর যখন আবার একে আলাদা করা হচ্ছে, তখন দ্রাবক তার আণবিক কাঠামোর মধ্যে ন্যানোপ্লাস্টিক বহন করে জলের পৃষ্ঠে ফিরে আসে। ল্যাবে, গবেষকরা পিপেট ব্যবহার করে ন্যানোপ্লাস্টিক-বোঝাই দ্রাবক অপসারণ করেছেন, যাতে পরিষ্কার, প্লাস্টিক-মুক্ত জল পাওয়া গেছে। গবেষকরা বলেন, ভবিষ্যতে এই পুরো প্রক্রিয়াকে বড়ো মাপে করা হবে, যাতে হ্রদ, মহাসাগরের মতো বৃহৎ জলাশয়ে প্রয়োগ করা যায়। এই দ্রাবক মিঠে আর লবণাক্ত উভয় জলের ক্ষেত্রেই কাজ করেছে। দ্রাবক নিরাপদ, বিষাক্ত নয়, যেহেতু জলকে বিকর্ষণ করে তাই জলের পরিশুদ্ধতা নষ্ট হয় না।