আপনি সম্ভবত সিনেমা দেখার সময় চুপচাপ কাঁদেন, বা হো হো শব্দে হেঁসে ফেলেন এমনকি হঠাৎ অনিয়ন্ত্রিতভাবে চেঁচিয়ে ওঠেন- ‘মার ব্যাটাকে মার’। সিনেমা দেখতে দেখতে সিনেমার মধ্যে ঢুকে পরা তখনই সম্ভব যদি দৃশ্যটার সাথে আপনি একাত্ম হতে পারেন। আবার সব ধরণের দৃশ্যতে আপনি কিন্তু একইরকম প্রভাবিত হন না। এবার একটা প্রশ্ন করুন নিজেকে – ক্রাইম, অ্যাকশন, কমেডি, নাকি ডকুমেন্টারি ফিল্ম, কোনটা বেশি পছন্দের আপনার? কেন জিজ্ঞাসা করছি? কারণ আপনার প্রিয় চলচ্চিত্রের ধরন বলে দেয় আপনার মস্তিষ্ক কীভাবে কাজ করে- আপনি মানুষটা কেমন।মার্টিন লুথার ইউনিভার্সিটি হ্যালে-উইটেনবার্গ (এমএলইউ) এর নেতৃত্বে ২৫৭ জন ব্যক্তির মস্তিষ্ক নিয়ে একটা পরীক্ষা করা হয়।অংশগ্রহণকারীদের মস্তিষ্কের কার্যকলাপ ফাংশানাল ম্যাগনেটিক রেসোনেন্স ইমেজিং (fMRI) ব্যবহার করে বিশ্লেষণ করা হয়। এমআরআই মেশিনে শুয়ে থাকা অবস্থায় ভীতিপূর্ণ মুখ বা রাগান্বিত মুখ, জ্যামিতিক আকার ইত্যাদি ছবি দেখানো হয়।কীভাবে মস্তিষ্ক, মানসিক উদ্দীপনাকে প্রসেস করে তা পরিমাপ করা হয়। গবেষকরা মস্তিষ্কের দুটো অংশ দেখেছেন – প্রথমত, অ্যামিগডালা, যা গুরুত্বপূর্ণ আবেগ প্রক্রিয়াকরণের জন্য দায়ী। আর মস্তিষ্কের পুরস্কার কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত নিউক্লিয়াস অ্যাকম্বেন্সের নিউরোনাল কার্যকলাপ। তাদের পছন্দের চলচ্চিত্রের তথ্য এবং তাদের মস্তিষ্কের কার্যকলাপ রেকর্ডিং করে দুটোর মধ্যে তুলনা করা হয়। তাতে দেখা যায়, কমেডি দেখতে ভালোবাসেন এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে নেতিবাচক মানসিক উদ্দীপনা খুব জোরালো প্রতিক্রিয়া জাগাতে পারে। অন্যদিকে, ডকুমেন্টারি বা ক্রাইম ফিল্ম কিংবা থ্রিলার যারা পছন্দ করেন তাদের নেগেটিভ উদ্দীপনা ততটা উত্তেজিত করতে পারেনা। আবার অ্যাকশন চলচ্চিত্রের অনুরাগীদের পজিটিভ, নেগেটিভ উভয় ক্ষেত্রেই খুব শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। ফ্রন্টিয়ার্স ইন বিহেভিওরাল নিউরোসায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত রিপোর্টে গবেষকরা উপসংহার টেনেছেন, আমারা এমন ধরনের চলচ্চিত্র বেছে নিই যা আমাদের মস্তিষ্ককে সবচেয়ে বেশি উদ্দীপিত করে।