বায়ুদূষণের ফলে বজ্রপাত বাড়ছে, জানাচ্ছে গবেষণা

বায়ুদূষণের ফলে বজ্রপাত বাড়ছে, জানাচ্ছে গবেষণা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বৈশাখের তীব্র গরমের পর স্বস্তির এক পশলা বৃষ্টি মানুষের মুখে হাসি এনে দেয়। কিন্তু এই স্বস্তির বৃষ্টির সঙ্গে আসা বজ্রপাত বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অনেক ক্ষেত্রে বাজ পড়ে মানুষের মৃত্যু হয়। মৌসম ভবনের পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, আমাদের দেশে প্রতি বছর বাজ পড়ে মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বগামী। কিন্তু এত বাজ কেন? জলবায়ু পরিবর্তন না দূষণ?
সম্প্রতি এক নতুন গবেষণা জানাচ্ছে বায়ু দূষণের কারণে বজ্রপাতের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষের হাত প্রাকৃতির আনাচে কানাচে যেমন পৌঁছে গেছে তেমনই মানুষের কাজকর্মে পরিবেশে এমন কিছু ক্ষতি হয়ে চলেছে যা তৎক্ষণাৎ আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠে না। পরিবেশ দূষণের কারণে বজ্রপাত এদের মধ্যে অন্যতম। ভার্জিনিয়ার জেমস ম্যাডিসন ইউনিভার্সিটির (জেএমইউ) গবেষকরা ১২ বছর ধরে বিভিন্ন এলাকা জুড়ে ৫০০,০০০-এরও বেশি বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়ের তথ্য পর্যবেক্ষণ করেন। তাদের মতে বাতাসে সূক্ষ্ম কণা বা অ্যারোসলের কারণে বজ্রপাতের সংখ্যা বেশি হচ্ছে। অ্যারোসল এবং বজ্রপাতের মধ্যে যে সম্পর্ক রয়েছে তা আগেই গবেষণায় দেখা গেছে তবে গবেষকরা বিষয়টির সঠিক মূল্যায়ন করার চেষ্টা করছেন, কারণ বায়ুমণ্ডলীয় বিভিন্ন কারণ এর সঙ্গে জড়িত। গবেষকদের মতে দূষণ মেঘের নিউক্লিয়াস হিসাবে কাজ করে।
দূষণ কণাগুলো ঊর্ধ্বমুখী বায়ু প্রবাহের মাধ্যমে ওপরে ওঠে। তারপর ঊর্ধ্বমুখী ও নিম্নমুখী বায়ুপ্রবাহের মাধ্যমে দূষণ কণাগুলোকে আলাদা করা হয়, যা মেঘের বৈদ্যুতিক চার্জকে বিভক্ত করে এবং আরও বজ্র উৎপাদনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। গবেষণায় বায়ুতে ২.৫ মাইক্রোমিটারের কণা বা PM2.5 এবং ১০ মাইক্রোমিটারএর দূষণ কণা বা PM10 দেখা হয়েছে। বজ্রপাতের সঙ্গে সেই কণার কার্যকলাপ তুলনা করা হয়েছে। গবেষকরা মনে করেছেন এই কণাগুলোর ঘনত্ব তাদের আকারের চেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। যদিও বায়ুতে বেশি পরিমাণে দূষিত কণা থাকলে বজ্রপাতের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায় তবে তথ্য অনুসারে, এমন একটি সময় আসে যখন বাতাসে অনেক বেশি কণা থাকা সত্ত্বেও বজ্রপাতের পরিমাণ কমে যায়। সম্ভবত ঝড়ের ভিতরে শক্তি হ্রাস পাওয়ার ফলে তা ঘটে। তাছাড়াও অন্যান্য অনেক কারণ যেমন বায়ু প্রবাহ, স্থলভাগের বিস্তার প্রভৃতি বিশেষ ভূমিকা পালন করে। গবেষণাটি অ্যাটমস্ফেরিক রিসার্চে প্রকাশিত হয়েছে।