গর্ভাবস্থা মস্তিষ্কের অংশ সঙ্কুচিত হয়, জানাচ্ছে গবেষণা

গর্ভাবস্থা মস্তিষ্কের অংশ সঙ্কুচিত হয়, জানাচ্ছে গবেষণা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
মস্তিষ্কের অংশ

অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মেয়েরা শারীরিক এবং মানসিক নানা পরিবর্তেন মধ্যে দিয়ে যায়। তবে এক নতুন গবেষণা গর্ভাবস্থায় মহিলাদের মস্তিষ্কের গঠন কীভাবে পরিবর্তিত হয় তা পর্যবেক্ষণ করেছে। গবেষণায় মেয়েদের গর্ভাবস্থার আগে, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় এবং ঠিক পরে সংগৃহীত মস্তিষ্কের স্ক্যান অধ্যয়ন করা হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে সেরিব্রাল কর্টেক্সে গ্রে ম্যাটার বা ধূসর-পদার্থের আয়তনে পরিবর্তন ঘটেছে। গর্ভাবস্থার কারণে মস্তিষ্কের ৮০%-এরও বেশি ধূসর পদার্থ সঙ্কুচিত হতে পারে, এবং তা স্থায়ীভাবে মুদ্রিত থাকে। একজন স্নায়ুবিজ্ঞানী তার গর্ভাবস্থায় এবং প্রসবের দুই বছর পরেও দু ডজনেরও বেশি মস্তিষ্কের স্ক্যান করিয়েছিলেন। তখন তিনি এই বিষয়টি লক্ষ্য করেন। প্রসবের পরে অবশ্য তিনি মস্তিষ্কে কিছু ধূসর পদার্থ ফিরে আসতে দেখেছিলেন। কিছু স্নায়ু কোশ ও তাদের মধ্যকার সংযোগ মস্তিষ্কে ফিরে এসেছিল। ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটি, সান্তা বারবারার সাইকোলজিক্যাল অ্যান্ড ব্রেন সায়েন্সের অধ্যাপক এমিলি জ্যাকবসের মতে গর্ভাবস্থায় মস্তিষ্কের অঞ্চলে ধূসর-পদার্থ গড়ে ৪% হ্রাস পেয়েছে। গবেষণা বলছে বয়ঃসন্ধিকালেও গ্রে ম্যাটার সমপরিমাণে হ্রাস পায়। বয়ঃসন্ধিকালে হরমোন নিঃসরণের ফলে মস্তিষ্কের ধূসর-পদার্থের পরিমাণ হ্রাস পায়, কারণ সেই সময় মস্তিষ্ক অতিরিক্ত কলা বাদ দেয় যাতে সে দক্ষতার সাথে কাজ চালিয়ে যেতে পারে। গর্ভাবস্থায় অনুরূপ কিছু ঘটতে পারে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। তবে এটি ভালোর জন্যই ঘটে। স্নায়ু তন্ত্র ও তার সংযোগের সূক্ষ্ম রদবদল নিউরাল-সার্কিটকে আরও কার্যকরী করে তোলে। সেই সূক্ষ্ম অদলবদল মস্তিষ্ককে চিরতরে পরিবর্তন করতে পারে এবং তা স্থায়ী হয়ে থাকে। গবেষণায় দেখা অন্যান্য পরিবর্তনগুলো অস্থায়ী ছিল। প্রথম এবং দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের সময়, হোয়াইট ম্যাটার বা সাদা পদার্থ আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং দক্ষতার সাথে তথ্য সরবরাহ করে। কিন্তু পরবর্তী ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের স্ক্যান থেকে জানা যায় যে প্রসবের পরে হোয়াইট ম্যাটার আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে। যদিও গবেষণাটি আরও প্রসারিত করতে হবে তবে অধ্যয়নের ফলাফল বলে যে গর্ভাবস্থার কারণে মস্তিষ্কের পরিবর্তন একটি সর্বব্যাপী ঘটনা হতে পারে, এবং এ বিষয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

14 − two =