মঙ্গল গ্রহে মাকড়সা!

মঙ্গল গ্রহে মাকড়সা!

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
মঙ্গল গ্রহে মাকড়সা!

পৃথিবীর পড়শি গ্রহ মঙ্গল বরাবরই বিজ্ঞানীদের কাছে আগ্রহের বিষয়। সৌরজগতের এই লাল গ্রহে কী প্রাণ আছে? বা মঙ্গলে কী জল আছে? এসব প্রশ্ন যুগ যুগ ধরে ভাবিয়ে তুলেছে বিজ্ঞানীদের। সেই মঙ্গলের মাটিতে দেখা গেছে অগণিত মাকড়সা! ঘটনাটি আজকের নয়, ২০০৩ সাল থেকেই এই মাকড়সাদের দেখতে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কৃত্রিম উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমে। মঙ্গল গ্রহে মাকড়শার ঝাঁকের মতো ওই বস্তুর রহস্য নিবারণ করেছে আমেরিকার মহাকাশ সংস্থা, নাসা। ২০২১ সালে সে বিষয়টি খোলসা করেন বিজ্ঞানীরা। জানা গেছে, ওই মাকড়শার মতো দেখতে বস্তু আসলে মঙ্গলগ্রহের ভূখণ্ড। মঙ্গলগ্রহের মাটিতে যে কার্বন ডাই অক্সাইডের বরফ রয়েছে, তা তরলে পরিণত না হয়ে যখন সরাসরি গ্যাসে পরিণত হয়, তাকে দেখায় অনেকটা মাকড়শার মতো। পৃথিবীতে পরীক্ষাগারে বসে ওই পরীক্ষা চালান গবেষকরা। আর ওই পরীক্ষার মাধ্যমে তারা এই বিষয়ে নিশ্চিত হন। গবেষকরা এই প্রথম মঙ্গলের পৃষ্ঠে দেখা অদ্ভুত মাকড়সার মতো বৈশিষ্ট্য পৃথিবীর বুকে পুনরায় তৈরি করেছেন। গবেষকরা তাদের এই আবিষ্কার নিয়ে খুবই উৎফুল্ল। লাল গ্রহের ভূখণ্ডে এই মাকড়সার ঝাঁককে ইংরেজিতে বিজ্ঞানীরা বলছেন “স্পাইডার্স অন মার্স”। এই ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যকে বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় বলা হয় অ্যারেনিফর্ম টেরেন যা মঙ্গল গ্রহের একাধিক স্থানে দৃশ্যমান। গ্রহের পৃষ্ঠে শত শত অন্ধকার ফাটলের মতো কাঠামো দেখা যায়, প্রতিটি থেকে শত শত পৃথক লাইন বেরিয়েছে, ঠিক মাকড়সার পায়ের মতো। উপর থেকে দেখলে, এই ১০০০ মিটার বিস্তৃত গোষ্ঠীবদ্ধ আকারগুলো, মঙ্গলগ্রহের ভূখণ্ডে মাকড়সার ঢেউয়ের মতো দেখায়। প্ল্যানেটারি সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণায়, গবেষকরা মাকড়সার প্রায় নিখুঁত ক্ষুদ্র সংস্করণ তৈরি করার জন্য পরীক্ষাগারে একটি বিশেষ চেম্বার ব্যবহার করে একটি ছোটো স্কেলে এই প্রক্রিয়াটিকে নকল করেছেন। মঙ্গলগ্রহে সূর্যালোক কার্বন ডাই অক্সাইডের বরফ ভেদ করে মাটিতে পৌঁছয়। এর ফলে মাটি গরম হয়। এই গরম মাটির সংস্পর্শে এসে বরফ তরল না হয়ে সরাসরি গ্যাসের আকার ধারণ করে। এর ফলে বরফের স্তরের উপর কালো ধোঁয়া তৈরি হয়। এর চাপে বরফের স্তরও ফেটে যায়। আর ওই ফাটল দিয়ে বেরিয়ে আসে গ্যাস ও ধুলো। পড়ে থাকে মাকড়শার আকারের কিছু দাগ।