জেট-ল্যাগ নিয়ন্ত্রণে নতুন উপায়

জেট-ল্যাগ নিয়ন্ত্রণে নতুন উপায়

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১০ অক্টোবর, ২০২৪

সময় বাঁচাতে অনেকেই মাঝেমধ্যে বিমানে যাতায়াত করেন। অনেকটা দূরের পথ খুব অল্প সময়ে যাওয়া যায় আকাশপথে। অল্প কিছু সময়ের জন্য বিমানে চাপলে খুব একটা অসুবিধে হয় না। তবে, দীর্ঘক্ষণের বিমানযাত্রায় ‘জেট ল্যাগ’ হওয়া স্বাভাবিক। যারা প্রতিনিয়ত বিদেশে যাতায়াত করেন তাদের কাছে জেট ল্যাগ শব্দটি সুপরিচিত। মাটি ছেড়ে খানিকটা উপরে উঠলে শরীরে অল্পবিস্তর অস্বস্তি হয়ে থাকে। অনেকেরই কানে তালা লেগে যায় আবার কারও গা বমি ভাব দেখা দেয়, কিংবা মাথা হালকা লাগে। তবে ‘জেট ল্যাগ’-এর সমস্যা ঠিক ততটা সাধারণ নয়। অনেক দূরের পথে ভ্রমণে টাইম জোনের পরিবর্তনের ফলে আমাদের শারীরিক ক্রিয়াকলাপের ছন্দ ব্যহত হয়। পূর্ব থেকে পশ্চিমে বা দূরের কোনো দেশে ঘুরতে গেলে এই ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। এটি আবার ‘টাইম জোন চেঞ্জ সিনড্রোম’ নামেও পরিচিত। এই জেট ল্যাগের ফলে খিদে, ঘুম, হরমোন নিঃসরণে ব্যাঘাত ঘটে। জেট ল্যাগ কাটিয়ে উঠতে কারও হয়তো একদিন লাগে, আবার কারও হয়তো কয়েকদিন লেগে যায়। PNAS জার্নালে প্রকাশিত, এক গবেষণা জানিয়েছে আমাদের শরীরের এই ছন্দ ব্যহত হলে কীভাবে তা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। গবেষকরা দেখেন CK1δ নামের এক প্রোটিন আমাদের জৈবিক ছন্দের বা বায়োলজিক্যাল ক্লকের সাথে জড়িত অন্যান্য প্রোটিনকে চিহ্নিত করে আমাদের জৈবিক ছন্দ বা সার্কাডিয়ান নিয়ন্ত্রণ করে। অন্যান্য প্রোটিন পরিবর্তন করার পাশাপাশি, CK1δ নিজেই শরীরের অভ্যন্তরীণ ঘড়ির সঙ্গে জড়িত প্রোটিনকে নিয়ন্ত্রণ করার নিজস্ব ক্ষমতা পরিবর্তন করে। এই আবিষ্কার থেকে জানা যায় কীভাবে CK1δ-এর একটি ছোটো অংশ এর সামগ্রিক কার্যকলাপকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। এই স্ব-নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতাটি CK1δ কার্যকলাপের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, এবং পরবর্তী ক্ষেত্রে এটি আমাদের সার্কাডিয়ান ছন্দকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। গবেষকদের মতে আমাদের জৈবিক ছন্দ নিয়ন্ত্রণ করা গেলে শুধু যে জেট ল্যাগ নিরাময় করা যাবে তা নয়, ঘুমের মান, বিপাক এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটতে পারে। এই গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারটি সম্ভাব্যভাবে চিকিত্সার জন্য নতুন দিক উন্মোচন করতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।