৩০ বছর সময়ব্যাপী পরীক্ষায় ধীর গতিতে বিবর্তন লক্ষ করেন বিজ্ঞানীরা

৩০ বছর সময়ব্যাপী পরীক্ষায় ধীর গতিতে বিবর্তন লক্ষ করেন বিজ্ঞানীরা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৮ অক্টোবর, ২০২৪

ত্রিশ বছর দীর্ঘ সময়ব্যাপী এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা একটি প্রাণী প্রজাতিকে তাদের চোখের সামনে বিবর্তিত হতে দেখেন।
সামুদ্রিক শামুকের এক প্রজাতি, বৈজ্ঞানিক নাম লিটোরিনা স্যাক্সটিলিস উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের চারপাশে উপকূলবর্তী অঞ্চলে দেখা যায়। এই অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে সুইডেনের কোস্টার দ্বীপপুঞ্জ এবং পাথুরে দ্বীপ, যা স্কেরি নামে পরিচিত। ১৯৯৮ সালে একটি বিষাক্ত অ্যালগাল ব্লুমের কারণে সেখানে শামুকের সংখ্যা প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। এই ভয়ঙ্কর ঘটনাটি বিবর্তনের সূত্রপাত ঘটায়। ১৯৯২ সালে, গোথেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস্তুবিজ্ঞানী কার্স্টিন জোহানেসন, ৭০০টি শামুককে স্কেরিতে পুনরায় প্রতিস্থাপন করেন। তিনি পরীক্ষামূলকভাবে একটি ভিন্ন ‘ইকোটাইপ’ ব্যবহার করেন, একটি ভিন্ন আবাসস্থল ব্যবহার করেন। তিনি দেখার চেষ্টা করেন শামুকগুলো তাদের মূল বৈশিষ্ট্য ধরে রাখতে পারে কিনা। গবেষকরা দেখেন কয়েক প্রজন্মের মধ্যে, নতুন এই শামুকগুলো তাদের পূর্বসূরীদের মতোই অনুরূপ পথে বিবর্তিত হয়। গবেষকরা শামুকের আকৃতি এবং জিনগত পরিবর্তনেরও কথা বলেন। গবেষকরা শামুকের মধ্যে ভিন্ন ধরনের পরিবর্তন লক্ষ্য করেন। তাদের চেহারা অর্থাৎ তাদের গড় দৈর্ঘ্য, খোলসের পুরুত্ব, রঙ, প্যাটার্ন। তাদের মধ্যে এই বাহ্যিক পরিবর্তন খুব দ্রুত স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তাদের খোলসের রঙ অনেক বেশি রঙিন, পাতলা এবং মসৃণ হয়ে ওঠে। তাদের মধ্যে জিনগত পরিবর্তনও দেখা যায়। গবেষকদের মতে এই বিবর্তনের জন্য দায়ী বেশ কয়েকটি কারণ। বিজ্ঞানীরা বলেন সম্ভবত শামুকের জিনোমে কাঙ্ক্ষিত বৈশিষ্ট্যগুলো খুব কম পরিমাণে আগে থেকেই উপস্থিত ছিল। আর এই শামুকগুলো পরিবর্তিত পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রেও উপযুক্ত ছিল। বিজ্ঞানীদের মতে অভিযোজন খুবই জটিল এবং পৃথিবীও আবহাওয়ার পরিবর্তন, জলবায়ু পরিবর্তন, দূষণ এবং নতুন নতুন পরজীবীর সম্মুখীন হচ্ছে৷ তাই প্রজাতিগুলো রক্ষার ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রাকৃতিক আবাসস্থল রক্ষা করতে হবে। গবেষণাটি সায়েন্স অ্যাডভান্সেস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।