পলিফার্মাসি অর্থাৎ দিনে পাঁচবার বা তার বেশি ওষুধ খাওয়া। গবেষকরা জানিয়েছেন স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বিষয়টি বেশ উদ্বেগের। সারা বিশ্বে প্রায় ৩০% বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে এটি দেখা যায়। এর ফলে পড়ে যাওয়া, ওষুধের মিথস্ক্রিয়া, হাসপাতালে ভর্তি এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে। বেশিরভাগ বয়স্ক ব্যক্তিরা বিভিন্ন ধরনের ক্রনিক রোগে বহু দিন ধরে আক্রান্ত থাকে। ফলে তাদের পলিফার্মেসি থাকার ঝুঁকি বেশি থাকে। তবে যে সব বয়স্ক ব্যক্তি অ্যালজাইমার্স বা ডিমেনশিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত তাদের পাঁচটিরও বেশি ওষুধ খাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। ড্রেক্সেল ইউনিভার্সিটির কলেজ অফ নার্সিং অ্যান্ড হেলথ প্রফেশনস-এর গবেষকরা সম্প্রতি বায়োলজিক্যাল রিসার্চ ফর নার্সিং-এ একটি সমীক্ষা প্রকাশ করেছেন যা অ্যালজাইমার্স রোগে আক্রান্ত বা রোগের লক্ষণ নেই এমন ব্যক্তিদের মধ্যে পলিফার্মাসির প্রভাব পরীক্ষা করেছেন। গবেষকের দল ন্যাশনাল হেলথ অ্যান্ড এজিং ট্রেন্ডস স্টাডি থেকে একটি সর্বজনীনভাবে উপলব্ধ তথ্য ব্যবহার করেছেন। সংস্থাটি ২০১১ সাল থেকে, বার্ধক্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক, শারীরিক, প্রযুক্তিগত এবং কার্যকরী ক্ষেত্র পরীক্ষা করার জন্য বার্ষিক তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। এই গবেষণার জন্য, গবেষকরা ২০১৬ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত তথ্য ব্যবহার করে চারটি দলের মধ্যে লক্ষণ, স্বাস্থ্যের ফলাফল এবং শারীরিক ক্রিয়াকলাপের পরিবর্তন তুলনা করেছেন। একটি দলের ব্যক্তিদের অ্যালজাইমার্স রোগ এবং সম্পর্কিত ডিমেনশিয়া এবং পলিফার্মাসি আছে; অপর দলটির শুধুমাত্র অ্যালজাইমার্স রোগ এবং এবং সংশ্লিষ্ট ডিমেনশিয়া আছে; তৃতীয় দলের শুধুমাত্র পলিফার্মাসি আছে; এবং চতুর্থ দলের অ্যালজাইমার্স, ডিমেনশিয়া এবং পলিফার্মাসি কোনোটাই নেই। তারা দেখেছেন যে ব্যক্তিরা বেশি পরিমাণে ওষুধ গ্রহণ করে এবং অ্যালজাইমার্স বা ডিমেনশিয়ার উপসর্গ রয়েছে তাদের মধ্যে পড়ে যাওয়া, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া, মৃত্যুহার এবং কম শারীরিক কার্যকারিতা দেখা গেছে। অর্থাৎ পলিফার্মাসি রোগাক্রান্ত বয়স্ক ব্যক্তিদের জীবনযাত্রার মানকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। তাদের কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়, খাওয়া, স্নান এবং পোশাকের মতো দৈনন্দিন জীবনের কাজে তাদের সহায়তার প্রয়োজন হয়।
২০১১ সালে ভারতের জনসংখ্যায় প্রবীণ নাগরিকদের অংশ ছিল ৮.৬% যা ২০৪১ সালে পৌঁছে যেতে পারে ১৫.৯ শতাংশে। অর্থাৎ অ্যালজাইমার্স, ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত প্রবীণদের সংখ্যাও বাড়বে এবং বর্তমানে এই রোগের কোনও প্রতিকার নেই। তাই পলিফার্মাসির ফলে ক্ষতি এড়াতে জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে হবে, নিজেদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে সময় থাকতে।