একটা নিরীহ ফুসকুড়ি দিয়ে শুরু, কিছু বোঝার আগেই শরীরের ৩০ শতাংশেরও বেশি ত্বকে ফোস্কা পড়তে শুরু করে আর তা থেকে পাতলা চামড়া উঠতে শুরু করে। মুখে, বুক শুরু হয়ে, তা মুখের ভেতরে, চোখে, যৌনাঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে। সংক্রমণ, অঙ্গ বিকল হওয়া, নিউমোনিয়াও হতে পারে। এক তৃতীয়াংশ ক্ষেত্রে রোগীদের অবস্থা মারাত্মক হতে পারে। যারা বেঁচে থাকে, তাদের সুস্থ হতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে, এদের আগুনে পোড়া মানুষের মতো একই ধরনের চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে।
এই সংক্রমণ ওষুধের প্রতি অনাক্রম্য প্রতিক্রিয়া দেখায়, যাকে বিষাক্ত এপিডার্মাল নেক্রোলাইসিস (TEN) বলে। তবে এটা বেশ বিরল। TEN-এর সাথে ২০০টার বেশি ওষুধ জড়িত রয়েছে। এটা সমস্ত বয়স গোষ্ঠী, জাতিকে প্রভাবিত করতে পারে, তবে পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের মধ্যে এর প্রকোপ বেশি দেখা যায় আর হিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস (এইচআইভি) আক্রান্তদের মধ্যে এটা ১০০ গুণ বেশি দেখা যায়। জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউটের জৈব রসায়নবিদদের নেতৃত্বে গবেষকরা জানাচ্ছেন, TEN সংক্রমণের তুলনায় কিছুটা কম সংক্রমণ যা স্টিভেনস-জনসন সিন্ড্রোম (এসজেএস) নামে পরিচিত, সেরকম সাতজন রোগীকে তারা নিরাময় করেছেন৷ রোগীদের কারোর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। সাতজন রোগীই চিকিৎসায় ভালোভাবে সাড়া দিয়েছিল এবং সুস্থ অবস্থায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। JAK ইনহিবিটরস (JAKi) নামে ওষুধের শ্রেণি একটা অতি-সক্রিয় ইমিউন পথ আটকে করে কাজ করে বলে মনে হয়। বিজ্ঞানীরা TEN-এর রোগীদের ত্বকের নমুনা ব্যবহার করে কোন কোশগুলো এই মারাত্মক রোগ ঘটাচ্ছে তা জানার জন্য এই সংকেত পথের গুরুত্ব আবিষ্কার করেছেন। সামগ্রিকভাবে, তারা JAK/STAT পথের সাথে জড়িত ছটি প্রোটিন শনাক্ত করেছেন যা ত্বক সংক্রমণে আক্রান্তদের মধ্যে নিয়ন্ত্রণহীন ছিল।
গবেষকরা জানিয়েছেন, তারা যে সাতজন রোগীকে সুস্থ করে তুলেছেন, তাদের শারীরিক উন্নতি ও পূর্ণ সুস্থতা দেখা গেছে। একজন ৫৯ বছরের ব্যক্তি ছিলেন, যার ফুসফুসের ক্যানসারের চিকিৎসা চলাকালীন ৩৫% শরীরে TEN দেখা যায়। তার প্রচুর চামড়া উঠে যায় আর মৃত্যুর সম্ভাবনা ৬০% হয়ে যায়। জেএকে/ স্ট্যাট পথে ত্বকের জ্বালা, কোশের ক্ষতি হয়, আবরণী কলা ছিঁড়ে যায়। শারীরিক ক্ষতি থেকে উদ্ধার পেতে রোগীর কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে, যে ওষুধ শারীরিক প্রতিকূলতা সৃষ্টি করেছে, তা খাওয়া বন্ধ করার পরেও এই সময় লাগবে। গবেষণাটি নেচার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
image credit: Eman Salah,
Department of Dermatology, Venereology & Andrology, Faculty of Medicine, Zagazig University, Egypt