আপনার অন্ত্রের মধ্যে যেসব ব্যাকটেরিয়া, ইস্ট আর ছত্রাক পরমানন্দে বাসা বেঁধে ঘর করে তাদের বলে মাইক্রোবায়োম। আপনার হজমের প্রক্রিয়া, পুষ্টি আহরণ, শৌচ অভ্যাস, মানসিক স্বাস্থ্য, আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, এসবের ওপরেই এই মাইক্রোবায়োম-এর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে। প্রতিটি ব্যক্তির মাইক্রোবায়োম স্বতন্ত্র। কোন জীবাণু কার অন্ত্রে কী পরিমাণে থাকবে তা নির্ভর করে ওই ব্যক্তির খাদ্যাভ্যাস আর পরিবেশের ওপর। কোন জীবাণুর কোন প্রিয় খাদ্য আপনার অন্ত্রে কত পরিমাণে আছে তারই ওপর নির্ভর করবে আপনার মাইক্রোবায়োম-এর স্বভাবচরিত্র।
যেমন ধরুন কফি। কফি বহু মানুষের প্রিয়, বহু জীবাণুরও প্রিয়। গবেষকরা আগেই জানিয়েছিলেন, অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম-এর চরিত্র গঠনে কফির ভূমিকা খুব বেশি। ১৫০ রকম খাবারের মধ্যে কফিই সম্ভবত সবচেয়ে বেশি করে অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম-এর সংগঠক উপাদানগুলির সঙ্গে যুক্ত হয়। মানুষের অন্ত্রের ওপর কফি কী-কী প্রভাব ফেলে তা জানবার জন্য সম্প্রতি ব্রিটেন আর আমেরিকার প্রায় আশি হাজার লোকের খ্যাদ্যাভ্যাস সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষণা হয়েছে। এছাড়া রক্তরসের (প্লাজমা) ৪০০+ এবং মলের ৩৫০+ নমুনা নিয়ে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা চালানো হয়েছে। নেচার মাইক্রোবায়োলজি পত্রিকায় গবেষক দলের অন্যতম সদস্য ডক্টর টিম স্পেক্টর জানিয়েছেন, বীন্স জাতীয় শুঁটি গাঁজিয়ে তুলে (ফার্মেন্ট করে) তৈরি কফির মধ্যে থাকে শত শত যৌগ। এদের মধ্যে আছে এক প্রস্থ পলিফেনল যারা রক্তে শর্করা-মাত্রা ও রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। ক্যাফিন-যুক্ত ও ক্যাফিন-মুক্ত দু ধরনের কফিতেই এরা হাজির থাকে। তাঁরা জানাচ্ছেন, হার্টের অসুখ, টাইপ-২ ডায়াবেটিস ্প্রভৃতি থেকে ক্ষতির আশঙ্কা কফি খেলে কমতে পারে।