ঠাণ্ডা লড়াই কথাটা এরই মধ্যে বেশ পুরোনো হয়ে গেছে। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তকে শুরু করে একেবারে ১৯৯০-এর দশক পর্যন্ত ওটা ছিল বিশ্ব-রাজনীতির এক প্রধান ঘটনা। দুই মহাশক্তি – একদিকে সোভিয়েত রাশিয়া, অন্যদিকে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র। কেউ সরাসরি অন্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে না; কিন্ত সারাক্ষণই একে অপরের পিছনে লেগে চলবে, এই ছিল তার মূল কথা। বৈজ্ঞানিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, কূটনৈতিক সব রকম প্রভাব খাটিয়ে চলবে। এসব এখন পুরোনো কাসুন্দি।
কিন্তু এই “ঠান্ডা” লড়াইয়ের প্রস্তুতি সে কতদূর বা কত নীচে ছড়িয়েছিল, হঠাৎই তার এক অদ্ভুত নিদর্শন মিলেছে। গত এপ্রিলে নাসা বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের জন্য চির তুষারাবৃত গ্রীনল্যান্ডে বিশেষভাবে নির্মিত বিমান পাঠিয়েছিল। তাতে বসানো ছিল রেডার যন্ত্রপাতি যার সাহায্যে বরফ-চাদরের গভীরতা মাপা যায়, তার নীচের শৈলভিত্তির স্তরগুলি নিরূপণ করা যায়। অবাক কাণ্ড! রেডারে যে-ছবি ফুটে উঠল তা এক তুষারনগরীর। জানা গেছে, ঠান্ডা লড়াইএর সময় আমেরিকার সেনাবাহিনী ‘ক্যাম্প সেঞ্চুরি’ নামে একটা ভূগর্ভ-ঘাঁটি বানিয়েছিল গ্রীনল্যান্ডের বরফের নীচে। তাতে ছিল একের পর সুড়ঙ্গ, যা গিয়ে মিশেছে বরফ-চাদরে। এই পরিত্যক্ত “গোপন শহর”টি বনানো হয়েছিল বরফ-পোকা প্রকল্পের (“প্রজেক্ট আইসওয়র্ম”) অঙ্গ হিসেবে। লক্ষ্য ছিল মোট ২৫০০ মাইল লম্বা এক সুড়ঙ্গ-মালা বানানো। সোভিয়েত রাশিয়া যদি পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ে তাহলে সেখানে গিয়ে লুকোনো যাবে। বিজ্ঞানের এরকম আরও কত অপব্যবহারের নমুনা যে লুকিয়ে আছে কে বলবে!