বৃহস্পতির চাঁদ আইও-তে উঁকি দিল নাসার জুনো

বৃহস্পতির চাঁদ আইও-তে উঁকি দিল নাসার জুনো

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪

বৃহস্পতিকে নিয়ে মহাকাশ বিজ্ঞানীদের মধ্যে কৌতূহলের শেষ নেই। এই গ্রহকে নজরে রাখতে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা, নাসা, থেকে জুনো নামের একটি মহাকাশযান পাঠানো হয়েছে। এই জুনো কেবল বৃহস্পতির আশপাশেই ঘুরছে না, বৃহস্পতির উপগ্রহগুলোর উপরও নজরদারি চালাচ্ছে। ২০১৬ সাল থেকে এই গ্রহের চারপাশে ঘুরছে নাসার মহাকাশযান জুনো। বৃহস্পতি গ্রহের ৯৫টির মতো চাঁদ আছে বলে এখনও জানতে পারা গেছে। সবচেয়ে বিখ্যাত চাঁদগুলোর মধ্যে রয়েছে চারটি উপগ্রহ: আইও, ইউরোপা, গ্যানিমিড এবং ক্যালিস্টো। ২০২৩ সালে নাসার যান জুনো এই আইয়ো-র খুব কাছে পৌঁছে যায়- প্রায় ৩৫০০০ কিলোমিটার এবং ১৩০০০ কিলোমিটারের মধ্যে উড়তে থাকে জুনো। জুনোর যন্ত্রগুলোর মধ্যে বৃহস্পতির চাঁদকে আরও ভালোভাবে দেখার জন্য জিরাম নামের এক যন্ত্র ছিল। জিরামের উচ্চ রেজোলিউশনের ইনফ্রারেড ছবি দেখে জানা যায় যে আইও-এর পুরো পৃষ্ঠ লাভা হ্রদ দিয়ে আচ্ছাদিত। আইও-এর পৃষ্ঠের যে অঞ্চলের সম্পূর্ণ তথ্য রয়েছে তা থেকে অনুমান করা হয়েছে এর প্রায় ৩% জুড়ে গলিত লাভা হ্রদ রয়েছে। আইও-র লাভা হ্রদের বেশ কয়েকটি ইনফ্রারেড চিত্র থেকে জানা গেছে লাভা হ্রদের কেন্দ্র ও হ্রদের দেয়ালের মাঝে হ্রদের সীমানা জুড়ে লাভার একটি সরু বৃত্ত রয়েছে। হ্রদের দেয়ালের গায়ে হ্রদের লাভার উপরের আবরণ লেগে ভেঙে পড়ে এবং ঠিক হাওয়াইয়ান লাভা হ্রদের মতো লাভার বলয় তৈরি করে। হ্রদের দেয়ালগুলো সম্ভবত কয়েকশো মিটার উঁচু, ফলে ম্যাগমা ওই আগ্নেয়গিরির বাইরে চলকে পড়ে না।কার্যত গোটা উপগ্রহটাই আগ্নেয়গিরিতে ভরা। আগ্নেয়গিরি থেকে অহরহ প্রচুর পরিমাণে লাভা বেরিয়ে আসে। বিজ্ঞানীরা জানান আইয়ো-র মাটির তলায় কোনও লাভার মহাসমুদ্র নেই। উপগ্রহ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা প্রচুর আগ্নেয়গিরির প্রতিটির নিজস্ব একটি করে লাভার চেম্বার রয়েছে। যেখানে রয়েছে প্রচুর গলিত লাভা। প্রতিটি আগ্নেয়গিরি তার নিজের সেই চেম্বারে থাকা লাভাই উগরে দেয়। নাসার পাঠানো মহাকাশযানের তথ্য আইয়ো সম্বন্ধে বিজ্ঞানীদের ধারণা বদলে দিয়েছে।