টিকা বয়স্কদের মধ্যে যথেষ্ট প্রতিরক্ষামূলক অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পারছেনা

টিকা বয়স্কদের মধ্যে যথেষ্ট প্রতিরক্ষামূলক অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পারছেনা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২ জানুয়ারী, ২০২৫

সভ্যতার জন্মলগ্ন থেকে যুগ যুগ ধরে ভাইরাসের হানাদারিতে কাবু আবালবৃদ্ধবনিতা। এই সব ভাইরাসের মধ্যে আর এক চক্রান্তকারী ভাইরাসের নাম ‘রেসপিরেটরি সিনসিশিয়াল ভাইরাস’ বা ‘আরএসভি’। ওই ভাইরাসের হানায় শিশুদের যে রোগটি হয়, তার নাম- ব্রঙ্কিওলাইটিস। গোটা বিশ্বে বছরে গড়ে যত শিশুর জন্ম হয়, তার অর্ধেকই আক্রান্ত হয় এই ভাইরাসের হানাদারিতে। বয়স্ক মানুষদের মধ্যে আরএসভি গুরুতর শ্বাসযন্ত্রের অসুস্থতার কারণ। বিশ্বব্যাপী, আরএসভি সংক্রমণের কারণে লক্ষাধিকেরও বেশি ৬০ বছর বয়সী ব্যক্তিরা অসুস্থ হয়ে পড়েন, কয়েক লক্ষ হাসপাতালে ভর্তি হন এবং হাজার হাজার ব্যক্তির মৃত্যুও ঘটে। গবেষকদের মতে আরএসভি সংক্রমণ ইনফ্লুয়েঞ্জা বা কোভিড সংক্রমণের তুলনায় বেশি গুরুতর। এত দিন সেই ভাইরাসকে রোখা বা বধ করার মতো কোনও হাতিয়ারই ছিল না আমাদের হাতে। সম্প্রতি সেই ভাইরাসকে কাবু করার হাতিয়ার হিসেবে তৈরি হয়েছে ভ্যাকসিন। জনস হপকিন্স ট্রান্সপ্ল্যান্ট রিসার্চ সেন্টারের একদল গবেষক তাদের গবেষণায় জানিয়েছেন যে সব ষাটোর্ধ বয়স্ক ব্যক্তিদের দেহের প্রতিরোধী ব্যবস্থা বা ইমিউন সিস্টেম তেমন জোরদার নয় বা যাদের অঙ্গ প্রতিস্থাপন হয়েছে এবং তাদের ঝুঁকি কমাতে ইমিউনোসপ্রেসিভ ওষুধ খেতে হয় বা যাদের ইমিউন সিস্টেম ডিজঅর্ডার রয়েছে – তাদের ক্ষেত্রে শ্বাসযন্ত্রের সিনসিশিয়াল ভাইরাসের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন ততটা দৃঢ়ভাবে সাড়া দেয় না যতটা একই বয়সী স্বাভাবিক ইমিউন ফাংশন সম্পন্ন মানুষদের ক্ষেত্রে হয়। এই গবেষণাটি আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের জার্নাল- JAMA-তে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষক অ্যান্ড্রু কারাবা বলেছেন, গবেষণায় দেখা গেছে যে সব বয়স্ক ব্যক্তিদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল সে সব ব্যক্তিরা টিকা নেওয়ার পরেও সেই একই বয়সী বয়স্ক ব্যক্তিদের তুলনায় আরএসভি-র বিরুদ্ধে কম অ্যান্টিবডি তৈরি করে। তাছাড়াও দেখা গেছে ইমিউনোকম্প্রোমাইজড ব্যক্তিদের মধ্যে অ্যান্টিবডির মাত্রা অত্যন্ত পরিবর্তনশীল। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কিছুজনের ভ্যাকসিনের কারণে ইমিউনিটি বৃদ্ধি পায় আবার কিছুজন তেমনভাবে সাড়া দেয়না। গবেষকরা আশাবাদী ভবিষ্যতে আরএসভি ভ্যাকসিনের প্রতিক্রিয়ার উপর আরও গবেষণা হবে।