উত্তর-পূর্ব ভারতের অরুণাচল প্রদেশ। ভাষাবিদদের একটি দল ‘অভিধান অভিযানে’ গিয়ে, আবিষ্কার করলেন কোরো ভাষা। সেখানকার প্রচলিত ভাষাগুলির মধ্যে এই ভাষা স্বতন্ত্র। এর ব্যবহার এখন প্রায় নেই বললেই চলে।
আঞ্চলিক ভাষা, মূলত যেগুলি প্রায় বিলুপ্ত বা বিলুপ্তের সম্ভাবনা আছে, সেগুলিকে খুঁজে বার করার জন্য ‘এন্ডিউরিং ভয়েস’ নামে একটি প্রজেক্ট সংগঠিত হয়েছে। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক্স এর উদ্যোক্তা।
এই ভাষাটির আবিষ্কার প্রায় হঠাৎ করেই। অঞ্চলে দুটি স্বল্প পরিচিত কথ্য ভাষার অনুসন্ধান করতে গিয়ে, এই ভাষাটি খুঁজে বার করেছেন গবেষকদের দল। গবেষণার জন্য তারা যে সমস্ত অঞ্চলে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন, সেখানের মানুষজনদের হাজার হাজার কথা রেকর্ড করে রাখছিলেন। পরবর্তীতে সেই রেকর্ড শুনে তারা বুঝতে পারেন, তারা আসলেই দুটো উপভাষা শুনছেন না। বরং এর মধ্যে থেকে কিছু শব্দ তৃতীয় একটি ভাষার- যা এই দুটির থেকে একেবারেই আলাদা।
গবেষকদের অন্যতম ড: ডেভিড হ্যারিসন জানান, “তৃতীয় ভাষাটিকে চিহ্নিত করতে আমাদের বেশি কসরৎ করতে হয়নি। কারণ প্রতিটি ক্ষেত্রেই এই ভাষা বাকি দুটির থেকে ভীষণভাবে অন্যরকম।”
অরুণাচলে, যে তিব্বতীয় বর্মন পরিবারগুলি রয়েছে, তাদের প্রায় ১৫০টি ভাষা, ভারতে চালু রয়েছে। কিন্তু কোরো ভাষা, একেবারে ভিন্ন। অন্য সব পরিবারের ভাষার সাথে এর কোন মিল নেই। তাদের অনুমান, এই ভাষা মাত্র ৮০০ থেকে ১২০০ মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। দুর্ভাগ্যবশতভাবে খুব সীমিত লোকেরা কথা বলতো বলেই এই ভাষা অরক্ষিত হয়ে রয়ে গেছে। এই ভাষার কোন লিখিত বা সংরক্ষিত রূপ মেলেনি।
আগামীতে, কোরো ভাষা নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যেতে গবেষকদের দল আবারও ভারতে আসবেন। এই ভাষা কোথা থেকে এসেছে, কিভাবে এই ভাষা এতদিন ভাষাবিদদের নজর এড়িয়েছিল, তা এনাদের কাছে যথেষ্ট কৌতূহলের।