
গোটেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় এবং পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা আলঝাইমার রোগের একটি সম্ভাব্য নতুন ওষুধ চিহ্নিত করেছেন। তাদের গবেষণা ‘নেচার মেডিসিনে’ প্রকাশিত হয়েছে। প্রোটিন টাউ (tau) স্নায়ু কোষগুলির কাঠামো তৈরির জন্য অত্যাবশ্যক। আলঝাইমার রোগে টাউ রোগসংক্রান্ত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়, যা স্নায়ু কোষগুলির ভিতরে ক্ষতিকারক পুঞ্জ গঠন করে। গবেষণায় দেখা গেছে যে দুটি নির্দিষ্ট অ্যামিনো অ্যাসিড, সিরিন-২৬২ এবং সিরিন-৩৫৬-এর পরিবর্তনের ফলে ক্ষুদ্র, দ্রবণীয় টাউ পুঞ্জীভূত হয়। তারপর বড়, আরও ক্ষতিকারক সুতোর মতো সরু সরু কাঠামো (fibrils) গড়ে ওঠে। অনুমান , এই দ্রবণীয় টাউ পুঞ্জগুলি মস্তিষ্কের মধ্যে রোগ প্রক্রিয়া বিস্তার করে।
বর্তমানে, লেকানেমাব (lecanemab) এবং বিকাশমান ওষুধ ডোনানেমাব-এর (donanemab) মতো চিকিৎসা বিটা-অ্যামিলয়েড নামক অন্য একটি প্রোটিনকে নিশানা করে, যা আলঝাইমার হলে মস্তিষ্কে জমা হয়। নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যে টাউকে নিশানা করাটা বিদ্যমান চিকিৎসাগুলির পরিপূরক হতে পারে।
গোটেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কাজ ব্লেন্নো (Kaj Blennow) এই গবেষণার জ্যেষ্ঠ গবেষক। তিনি ব্যাখ্যা করেছেন, টাউ-এর পরিবর্তনগুলি বুঝতে পারলে এমন ওষুধ তৈরি করা যেতে পারে যা টাউ রোগপ্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করবে। এটি অ্যামিলয়েড প্ল্যাক সম্পর্কিত বিদ্যমান চিকিৎসাগুলির কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে পারে। অ্যামিলয়েড প্লাক হল এক ধরনের প্রোটিন পুঞ্জ যা মস্তিষ্কর স্নায়ুকোষগুলোর মাঝের ফাঁকে ফাঁকে জমে উঠে আলঝাইমার রোগ বাধায় ।
এ গবেষণার এক প্রধান চরিত্র তোহিদুল ইসলাম তাদের গবেষণার প্রাথমিক পর্যায়ে টাউ-এর রূপান্তরের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। এই গবেষণাটি নতুন চিকিৎসা বিকাশের পথ উন্মোচন করেছে। যা অ্যামিলয়েড এবং টাউ উভয়ের রোগ সৃষ্টিপ্রক্রিয়াকে নিশানা করে আলঝাইমার রোগের অগ্রগতিকে ধীর করে দিতে বা বন্ধ করে দিতে পারে। সার্বিকভাবে, এই গবেষণাটি আলঝাইমার গবেষণায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের প্রতিনিধি। এ থেকে ভবিষ্যতে উন্নত চিকিৎসার বিকাশ ঘটার আশা রয়েছে।
তথ্যসূত্রঃ https://www.sciencedaily.com/releases/2025/02/250211134459.htm?utm_source=substack&utm_medium=email