গ্রীনহাউস গ্যাস নিঃসরণ না করে সৌরশক্তির সঠিক ব্যবহার অত্যাধুনিক প্রক্রিয়া উদ্ভাবনই অদূর ভবিষ্যতে উষ্ণায়ন কমাতে পারে-এই গবেষণায় মগ্ন বিশ্বের বিজ্ঞানীদের এক বিরাট অংশ। সুর্য নিসৃত তাপমাত্রা এবং হাওয়াকে অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে মানুষের এনার্জিতে কাজে লাগানোর যে ‘মুন-শট’ প্রক্রিয়া সেই কাজকে বাস্তবায়িত করার স্বপ্নে মশগুল বিজ্ঞানীদের এক বিরাট অংশ। শুশু বিজ্ঞানী নয়, বিভিন্ন বৃহৎ কোম্পানি এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টরাও এই উদ্যোগে সামিল হচ্ছেন। গ্রীনহাউস গ্যাস নিঃসরণে মানুষ যে শক্তি অর্জন করে আসছে এত বছর ধরে সেই শক্তির উৎসটা বদলে ফেলার একটা চেষ্টা করা হচ্ছে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির বিজ্ঞানীরা এবং আরও অনেক দেশের বিজ্ঞানীরা ব্যস্ত ‘মুন-শট’ প্রক্রিয়ার উদ্ভাবন নিয়ে। এই উদ্ভাবনী প্রক্রিয়া আবিষ্কারের কর্মযজ্ঞে অর্থ বিনিয়োগ করছে ইতালি, নরওয়ে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটেলের একাধিক এনার্জি কোম্পানিও।
মুন-শট পদ্ধতিতে আধুনিক নিউক্লিয়ার প্লান্টগুলো হবে এখনকার বিশালাকার নিউক্লিয়ার প্লান্টগুলোর তুলনায় চেয়ে অনেক ছোট। তারপর কার্বন নিঃসরণ যাতে কম হয় তাই কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে ক্যাপচার করে ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। গত মাসে আইসল্যান্ডের একটি কার্বন স্টোরেজ কোম্পানি কার্বফিক্স বিশ্বের সর্ববৃহৎ কার্বন ক্যাপচারিং প্লান্টের উদ্বোধন করল। বাতাস থেকে কার্বন নিয়ে সেটা পাম্প করে মাটির তলায় জমা করে দেওয়া! ভবিষ্যতে যা রূপান্তরিত হয়ে যাবে পাথরে!
মুন-শট প্রক্রিয়ায়, বিজ্ঞানীরা বলছেন, হাইড্রোজেনের সঙ্গে ন্যাচারাল গ্যাসের মিশ্রণ করতে হবে। তাতে অনেক কম কার্বন নিসৃত জ্বালানিতে সে রূপান্তরিত হবে। গাড়ির নিষ্কাশন থেকে সে ক্ষেত্রে বেরবে জলীয় বাষ্প! তারপর বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো হবে জিওথার্মাল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, ইন্দোনেশিয়া, কেনিয়া এবং ফিলিপিনসে অধিকাংশ বিদ্যুৎকেন্দ্র এখন জিওথার্মাল। যেখানে কয়লার ব্যবহার নেই!
স্বপ্ন মনে হতে পারে মুন-শট প্রক্রিয়াগুলোর কথা জেনে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা শুধু স্বপ্ন দেখানোর জন্য এই গবেষণায় মগ্ন নেই। তাদের নিরলস চেষ্টা ভবিষ্যতে এই প্রক্রিয়াকে বাস্তবায়িত করার এবং পৃথিবীর তাপমাত্রা কমানোর।
কাল রবিবার গ্লাসগোয় যে ক্লাইমেট সামিট শুরু হচ্ছে সেখানে রাষ্ট্রপ্রধানরা মুন-শট প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করবেন তো? না হলে বিজ্ঞানীদের পরিশ্রম ব্যর্থ হয়ে যাবে!