ইতিবাচক চিন্তা, বয়সে সুস্থ মন

ইতিবাচক চিন্তা, বয়সে সুস্থ মন

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৮ জুন, ২০২৫

এজিং অ্যান্ড মেন্টাল হেলথ জার্নালে প্রকাশিত একটি দীর্ঘমেয়াদী গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ইতিবাচক ভাবনা চিন্তা করেন তাদের মধ্যে মধ্যবয়সে স্মৃতিভ্রংশের সম্ভাবনা কম থাকে। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও স্পেনের গবেষকেরা ৫০ বছরের বেশি বয়সী ১০,৭৬০ জন মানুষের উপর ১৬ বছর ধরে গবেষণা চালিয়ে এই ফলাফলে উপনীত হয়েছেন।
গবেষণায় অংশগ্রহণকারীরা শুরুতে ডিমেনশিয়া রোগে আক্রান্ত ছিলেন না। তাদের দুই বছর পরপর মোট ৯ বার স্মৃতি এবং মানসিক সুস্থতা সংক্রান্ত পরীক্ষা নেওয়া হয়। স্মৃতি যাচাইয়ের জন্য গবেষকরা অংশগ্রহণকারীদের দশটি শব্দ তাৎক্ষণিকভাবে এবং বিলম্বে মনে রাখার ক্ষমতা পরীক্ষা করেন। এছাড়া মানসিক সুস্থতা মূল্যায়নের জন্য আত্মনিয়ন্ত্রণ, আত্মনির্ভরতা, আনন্দ এবং জীবনের সুযোগ সম্পর্কিত প্রশ্ন রাখা হয়েছিল।
ফলাফল থেকে দেখা যায়, উচ্চ মানসিক সুস্থতাযুক্ত ব্যক্তিরা স্মৃতির পরীক্ষায় তুলনামূলক ভালো করেছেন। এমনকি যারা হালকা বিষণ্ণতায় ভুগছিলেন, তাদের ক্ষেত্রেও ইতিবাচক মানসিক অবস্থার প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। গবেষকেরা বলেন, এই সম্পর্কটা ছোট হলেও তাৎপর্যপূর্ণ, এবং এটি বিষণ্ণতার প্রভাব বাদ দিয়েও প্রযোজ্য।
তবে গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়নি যে ভালো স্মৃতি ভবিষ্যতে মানসিক সুস্থতা বাড়ায়। বরং প্রমাণ মেলে যে মানসিক সুস্থতা আগে এবং তারই প্রভাব স্মৃতির উপর পড়ে।
মানসিক সুস্থতা বলতে বোঝায় আনন্দ, আত্মবিশ্বাস, লক্ষ্যবোধ এবং নিজের জীবনের উপর নিয়ন্ত্রণ। গবেষকরা বলেন, মানসিক সুস্থতা বাড়াতে মনোযোগ বাড়ানোর জন্য কিছু করা উচিত যা পরবর্তীতে স্মৃতি রক্ষা করতে সহায়তা করতে পারে।

অ্যালঝেইমার রিসার্চ ইউকে-এর তথ্য ব্যবস্থাপক এমা টেলর জানান, হৃদযন্ত্রের যত্ন নেওয়া, মানসিক সচেতনতা এবং সামাজিক সংযোগ স্মৃতি রক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। স্মৃতি ও মানসিক অবস্থার পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে, তবে ইতিবাচক মানসিকতা বজায় রাখা যে মস্তিষ্কের সুস্থতার অন্যতম চাবিকাঠি এই গবেষণা সেই ধারণাকে জোরদার করে।
এই গবেষণাকে ভবিষ্যতের স্মৃতিভ্রংশতা প্রতিরোধী কৌশল তৈরির ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

13 + ten =