প্রথম আদি তারকার ভর

প্রথম আদি তারকার ভর

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৫ জুলাই, ২০২৫

একেবারে প্রথম আদি তারাগুলি কোনো টেলিস্কোপ, এমনকি ‘ওয়েব’ কিংবা ‘রুবিন’ এর মতো অতিকায় চোখেও অদৃশ্য। এদের বলে পপুলেশন-থ্রি বা পপ থ্রি। তার করণ দুটি। ১) দৃশ্যমান মহাবিশ্বের দূরপ্রান্তের গ্যালাক্সিগুলিকে আমরা দেখাতে পাই, কিন্তু আলাদা আলাদা করে তারাদের দেখতে পাই না।। ২) ওই তারাগুলির জন্ম মহাজাগতিক ঊষার আগে। সেই ঊষাকালে মহাবিশ্ব চার্জহীন হাইড্রোজেন আর হিলিয়ামের একটা ঘোলাটে ঝোলের দশা থেকে বেরিয়ে এসে আয়নীভূত হাইড্রোজেনের এক স্বচ্ছ দশায় উত্তীর্ণ হয়। বস্তুত ওই পপ-৩ নামে অভিহিত তারাগুলোই সে-কুয়াশা সরায়। মহাবিশ্বের রূপ ধারণের পিছনে ওই আদি তারাদের ভূমিকা অসামান্য। দেখা যাক এদের সম্পর্কে কতটুকু জানা যায়।
বিজ্ঞান কী করে বিপত্তিকে সুবিধায় পরিণত করে, তার এক অতুলনীয় উদাহরণ হল এক নতুন সমীক্ষা। হাইড্রোজেনের যে-কুয়াশা আমাদের বুঝতে দেয় না ওই তারাগুলো কত প্রকাণ্ড, সেই কুয়াশারই একটা বিশেষ দিককে কাজে লাগাবে এই সমীক্ষা, যা অল্প কদিনের মধ্যে চালু হতে চলেছে।
কী সেই বিশেষ দিক? মহা বিস্ফোরণের প্রায় দশ কোটি বছর পর হাইড্রোজেনের ঝোলটা থেকে বেরোতে শুরু করে রেডিও সংকেত। এটাকে বলা হয় ‘২১ সেমি সংকেত’। আমরা জানি যে-বস্তুটি থেকে আলো (হ্যাঁ, রেডিও সংকেতও তার অন্তর্গত) নির্গত হয় তার সঙ্গে কোনো ভরযুক্ত বস্তুর আন্তঃক্রিয়া ঘটলে আলো ব্যাহত হয়। কাজেই তত্ত্বগতভাবে ওই ২১ সেমি সংকেতটিও নিশ্চয়ই মহাজাগতিক কুয়াশা ভেদ করে বেরিয়ে-আসা পপ-৩ তারাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। আর সেই তারাদের এককটির ভর যেহেতু একেক রকম, তাই সেই প্রভাবের মাত্রাও নিশ্চয়ই আলাদা আলাদা হয়েছিল। তারাগুলো যে বিশাল, সেটা আমরা জানি, কিন্তু এই হিসেবটা যদি ঠিকমতো করা যায় তাহলেই তো অবশেষে জানা যাবে পপ-৩ তারাগুলো ঠিক কত বড়ো ছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 + 5 =