
বার্ধক্য প্রতিরোধ ও কোষের জিনগত সুরক্ষা নিয়ে অসাধারণ এক গবেষণায় আশা দেখাচ্ছে রাপামাইসিন ওষুধ। ৬৫ থেকে ৭৫ বছর বয়সী ৯জন প্রবীণ পুরুষের ওপর পরিচালিত একটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে দেখা গেছে, এই ওষুধ প্রতিরোধ কোষের (PBMC) ডি এন এ কমিয়ে, কোষের টিকে থাকার ক্ষমতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে দেয়। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে চারজনকে প্রতিদিন ১ মি.গ্রা. রাপামাইসিন এবং অপর পাঁচজনকে প্লাসিবো দেওয়া হয় চার মাস ধরে। এ সময় গবেষকরা কোষকে কৃত্রিমভাবে ডি এন এ ক্ষতির সম্মুখীন করেন। একবার জিওসিন দিয়ে, আবার কখনও হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড দিয়ে। বিভিন্ন সময়ে রক্তকোষের অবস্থা পরীক্ষা করে দেখা হয় রাপামাইসিন কতটা সুরক্ষা দিতে পারে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ক্ষতির সংকেত (γH2AX) প্রথমে দ্রুত বেড়ে গেলেও রাপামাইসিন প্রয়োগে তা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। কোষের স্ট্রেস-প্রোটিন p53 ও p21–এর মাত্রাকেও ওষুধটি কার্যকরভাবে হ্রাস করে। এমনকি ডি এন এ ক্ষতির পরেও কোষের প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষামূলক প্রক্রিয়া ‘অটোফেজ ’ রাপামাইসিনের মাধ্যমে সক্রিয় হয়। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ফল হল, শুধু জিওসিনে যেখানে মাত্র ২০% কোষ বাঁচে সেখানে রাপামাইসিন প্রয়োগে প্রায় ৬০% কোষ টিকে থাকে। চার মাস রাপামাইসিন সেবনের পর প্রতিরোধকোষে বার্ধক্যের সূচক p21 হ্রাস পেয়েছে, অথচ সুরক্ষামূলক প্রোটিন p53 বেড়েছে। একই সঙ্গে ক্লান্তির লক্ষণ বহনকারী মার্কার (KLRG1, NKG2A, LAG3) উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। গবেষকরা বলছেন, এই ফলাফল রাপামাইসিনকে শুধু সুস্থ বার্ধক্যের সহায়ক হিসেবেই নয়, বরং ক্যান্সার চিকিৎসাজনিত রেডিয়েশন ক্ষতি কমানোর হাতিয়ার হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। আরও আশ্চর্যের বিষয়, মহাকাশ অভিযাত্রীদের জন্য মহাজাগতিক রেডিয়েশনের ভয়াবহ ঝুঁকি মোকাবিলাতেও এটি নতুন সমাধান এনে দিতে পারে।
সূত্র : Rapamycin exerts its geroprotective effects in the ageing human immune system by enhancing resilience against DNA damage
by Loren Kell, BiorXiv (August 19, 2025)