মানুষ শব্দ দু’টিকে বিশেষণের মত ব্যবহার করে। ‘আহা! ছেলেটা একবারে চাঁদের টুকরো হয়েছে!’ জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বাস্তবেই সেই ‘চাঁদের টুকরো’ দেখতে পেলেন মহাকাশে এত বছর পর! চাঁদের টুকরোগুলো আসলে কী? ছোট একটি গ্রহাণু! পৃথিবী থেকে মাত্র দেড় কোটি কিলোমিটার দূরের কক্ষ পথে গ্রহাণুটি ঘুরছে। জ্যোর্তিবিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণ, ভুল করেও এই গ্রহাণু বা ‘চাঁদের টুকরো’ পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে এবং সংঘর্ষ হয় তাহলে কিন্তু পৃথিবীটা ধ্বংস পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে! জ্যোর্তিবিজ্ঞানীরা এই ছোট গ্রহাণুর আয়তন জানিয়েছেন, বিশাল এক নাগরদোলার মত (ইলেকট্রিক নাগরদোলার মত)! যার ব্যাস ১৫০ থেকে ১৯০ ফুট! পৃথিবীর কত কাছে সে আছে? ৯ মিলিয়ন মাইল দূরে।
নেচার ম্যাগাজিনে প্রকাশিত লেখা থেকে জানা গিয়েছে, ২০১৬-য় দক্ষিণ অ্যারিজোনার মাউন্ট গ্রাহাম পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রথমবার এই গ্রহাণুকে দেখা গিয়েছিল। গ্রহাণুর নাম দেওয়া হয়েছে কামোওয়ালা। তখনই জ্যোর্তিবিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছিলেন, এই গ্রহাণু বা চাঁদের টুকরোটি চাঁদেরই অংশ! মাউন্ট গ্রাহামের সঙ্গে যুক্ত এক জ্যোর্তিবিজ্ঞানী বেন শার্কলে জানিয়েছেন, কয়েক লক্ষ বছর আগে মঙ্গলের মাপের কোনও গ্রহের সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষ হয়েছিল। সংঘর্ষের ফলে তৈরি হওয়া ধ্বংসাবশেষ থেকেই কামোওয়ালার জন্ম। এই গ্রহাণু থেকে যে পরিমাণ আলো বেরয় সেটা চাঁদেরই মত। এই গ্রহাণুতে যে চন্দ্র শিলা দেখা গিয়েছে সেটাও চাঁদেরই পাথরের মত! তারপরই বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছেন এই গ্রহাণু চাঁদেরই অংশ। তবে একইসঙ্গে জ্যোর্তিবিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর যে সৌরকক্ষে চাঁদের টুকরোর আবর্তন সেটা থাকবে না। গ্রহাণুটি ধীরে ধীরে সরে যাবে। তখন হাজার চেষ্টা করলেও আর তাকে টেলিস্কোপে চোখ রাখলেও দেখা যাবে না। সেটা হতেও আরও অন্তত ৩০০ বছর!