গত একবছর ধরে কোটি কোটি মানুষের শরীরে প্রবেশ করেছে কোভিড-১৯-এর টীকা। টীকা দেওয়া হয়েছে চিড়িয়াখানাগুলোয় থাকা প্রাণীদের শরীরে। এমনকী, চিড়িয়াখানায় থাকা বাঘ, সিংহ, পাখিদেরও টীকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাদ পড়েছে পোষা কুকুর আর বিড়ালরা! সেই নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গত একবছর ধরে পশুচিকিৎসকদের প্রচুর প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। এখনও হচ্ছে। পেনিসিলভ্যানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুচিকিৎসক এলিজাবেথ লেননের বক্তব্য, “প্রচুর পোষ্যের মনিব গত একবছরে বহুবার আমার কাছে জানতে চেয়েছেন কবে আসবে পোষ্যের জন্য কোভিড টীকা। সেটা অসম্ভবও ছিল না। চিড়িয়াখানায় থাকা যে প্রাণীরা কোভিডের টীকা পেয়েছিল সেটা আসলে প্রথমে ভাবা হয়েছিল পোষ্যদের জন্যই!” অনেক বিশেষজ্ঞদের দাবি, টীকা দেওয়ার ক্ষেত্রে পোষ্যদের গুরুত্ব দেওয়া হয়নি! আবার ইলিনয়েস বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুচিকিৎসক উইল স্যান্ডারের মত মানুষের বক্তব্য, গৃহপালিত কুকুর বা বিড়ালের করোনা হলেও তার মাত্রা এত কম থাকবে যে ওদের টীকা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না!
কিন্তু বাস্তবের ছবিটা এরকম নয়। ঘরে থাকা কুকুর, বিড়ালদের মধ্যেও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। অন্তত তথ্য তাই বলছে। ২০২০-র ফেব্রুয়ারিতে হং কং-এ এক মহিলা আক্রান্ত হলেন কোভিডে। তারপর ঘরের আরও দু’জন আক্রান্ত হলেন। তারপর দেখা গেল অপ্রত্যাশিতভাবে তাদের ১৭-বছরের বৃদ্ধ পমেরিয়ান কুকুরটিও কোভিড ভাইরাসে আক্রান্ত। হং কং-এ-ই আরও একটি জার্মান শেফার্ড কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিল। বেলজিয়াম আর নিউ ইয়র্কেও অনেক বিড়ালকে দেখা গিয়েছিল কোভিডে আক্রান্ত হতে।
একটা সাম্প্রতিক গবেষণা জানাচ্ছে, গৃহপালিত পোষ্যদের ৭৬ শতাংশ কোভিডে আক্রান্ত হয়েছে গত বছর থেকে। কিন্তু তাও কেন পোষ্যদের জন্য টীকা তৈরি হয়নি? বিজ্ঞানীদের মতে প্রধান কারণ, প্রথমত দেখা গিয়েছে কুকুর বা বিড়ালদের মধ্যে কোভিড ভাইরাস ঢুকলেও তার তীব্রতা খুব কম। দ্বিতীয়ত, পোষ্যদের থেকে কোনও মানুষ এখনও পর্যন্ত কোভিডে আক্রান্ত হননি।