বিশ্বব্যপী মিথেন গ্যাস নিঃসরণ ৩০ শতাংশ কমাতে না পারলে ২০৫০-এর মধ্যেও বিশ্ব উষ্ণায়ন ১.৫ ডিগ্রির নীচে নামানো প্রায় অসম্ভব। গ্লাসগোয় এই নিয়ে কম আলোচনা হয়নি, কম প্রতিশ্রুতি রাষ্ট্রপ্রধানরা দেননি। মিথেন নির্গমনে বিশ্বে চিন ও রাশিয়ার পর তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। খুব সম্প্রতি থার্ড পোল নামের এক আন্তর্জাতিক সংস্থা জানিয়েছে ২০৫০-এর মধ্যে ভারতের পক্ষে মিথেন নির্গমন কমানো খুব কঠিন। কারণ দেশে মিথেন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে আনার কোনও পরিকাঠামোই এখনও পর্যন্ত তৈরি হয়নি! মিথেন নির্গমন কমাতে প্রযুক্তিগত যে পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়, সেটা অন্যান্য দেশের মত ভারতেও হয়নি।
পরিবেশবিদ এবং প্রাণীবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন মিথেন নির্গমনের মূল ক্ষেত্র কৃষিকাজ এবং পশুপালন। এই দু’টো কাজের প্রচলন ভারতে সর্বাধিক এবং এই দুই কাজের ওপরেই দাঁড়িয়ে ভারতের অর্থনীতি। তাই কৃষিকাজ ও পশুপালনের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির বদল না আনতে পারলে মিথেন নির্গমন কমানো যাবে না। জাপান কিন্তু প্রযুক্তির পরিবর্তন এনে ১৯৯০-এর পর থেকে মিথেন গ্যাসের নিঃসরণ অনেক পরিমাণে কমিয়ে এনেছে। ভারতে মিথেনে মোট নির্গমনের ১১ শতাংশ ধান চাষ থেকে। আর ৬৫ শতাংশ মিথেন নিঃসরণ হয় পশুপালনের কাজ থেকে। বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণ জানাচ্ছে গত পাঁচ দশকে ভারতে মাংস, দুধ আর ডিমের চাহিদা ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ায় গবাদি পশুপালনের হার বেড়েছে প্রায় চার গুণ। ভবিষ্যতেও এই চাহিদা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা গবেষকদের। তাই বিজ্ঞানীরা ভাবতে পারছেন না ২০৫০-এ মিথেন নির্গমন কোথায় গিয়ে পৌঁছবে।কার্বন-ডাই-অক্সাইডের চেয়েও মিথেনের তাপশক্তি ধারণ ক্ষমতা প্রায় ৮০ গুণ বেশি হওয়ায় ভারতের জলবায়ু পরিবর্তনেও ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়তে পারে অদূর ভবিষ্যতে।