আগুনে বিপন্ন ক্যালিফোর্নিয়ার সেকুয়া

আগুনে বিপন্ন ক্যালিফোর্নিয়ার সেকুয়া

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৪ জানুয়ারী, ২০২২

ক্যালিফোর্নিয়ার প্রাচীন সেকুয়া গাছ। যাদের বলা হয় ‘স্থায়িত্বের প্রতীক’। বলারই কথা, কারণ একটা সেকুয়া গাছের বয়স এক হাজার বছর! একটা গাছের গুঁড়িকে জড়িয়ে ধরতে অন্তত ৩০ থেকে ৪০জন মানষের প্রয়োজন হয়! অবিশ্বাস্যরকমের বড় হয় গাছগুলো। সামনে দাঁড়ালে মনে পড়ে আদিমকালের কথা। ব্রকোলির মত দেখতে সেকুয়া গাছের কাণ্ডগুলোকে দেখে মনে হয় কোনও ডাইনোসর হেঁটে বেড়াচ্ছে! পৃথিবীর প্রাচীনতম জীব। দীর্ঘতমও বটে এই গাছ। সবচেয়ে দীর্ঘ গাছটি উচ্চতায় ২৯৫ ফুট! অন্তত ৩০ তলা একটি বাড়ির সমান। তার নাম জেনারেল শেরম্যান। তার জন্ম যীশুখ্রিষ্টেরও জন্মের আগে! ক্যালিফোর্নিয়ার সিয়েরা নেভাদা পর্বতমালার গায়ে অবস্থিত সেকুয়া জাতীয় পার্কের দায়িত্বে যিনি আছেন সেই ক্রিষ্টি বিংহ্যাম জানিয়েছেন, সেকুয়া গাছ এত বছর বাঁচে কারণ এই গাছই একমাত্র গাছ যে সমস্ত রকমের আবহাওয়ার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে।

সেই ছবি হঠাৎ বদলে গেল! গত ৬ বছর ধরে ক্যালিফোর্নিয়ায় হওয়া একাধিক দাবানলে বদলে গেল ছবিটা। সেকুইয়া গাছ পালটে গেল কাঠকয়লার ভস্মে! যে গাছের গুঁড়ি জড়িয়ে ধরতে ৩০ থেকে ৪০ জন মানুষের প্রয়োজন হত সেটা হয়ে গেল একটা মোমবাতির মত সরু! সেকুয়া পার্কের কোথাও কোথাও দেখা গেল সেকুয়া আর নেই, একটা গোটা কবরখানায় পরিণত হয়েছে। ক্রিষ্টি বলেছেন, “এক থেকে দু’হাজার বছর বয়েসের গাছ ছিল। আরও ৫০০ থেকে ৮০০ বছর বাঁচত। কিন্তু দাবানলে সব শেষ।” দাবানলের মধ্যে গতবছরের গ্রীস্মেই হয়ে গিয়েছে দিক্সি দাবানল। শুধু সেকুয়া গাছ নয়, সেই দাবানলের আগুনে দগ্ধ হয়ে শেষ হয়ে গিয়েছিল গ্রীনভিল শহরটাও!
এর পরও ক্রিষ্টি আশা ছাড়ছেন না। বলছেন, “শিশু সেকুয়াগুলো যা আগামীদিনে বাড়ছে সেগুলো কিন্তু পোড়া মাটিও পছন্দ করে! যদি অরণ্য সংরক্ষণ সঠিকভাবে করতে পারে সরকার তাহলে আবার সেকুয়াকে ফিরিয়ে আনা যেতে পারে।”