লুপ্তপ্রায় পতঙ্গভুক গাছ কাঁকসার শিবপুরে

লুপ্তপ্রায় পতঙ্গভুক গাছ কাঁকসার শিবপুরে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

বিগত কিছুদিন ধরে কাঁকসার শিবপুরে গজিয়ে উঠেছে লুপ্তপ্রায় পতঙ্গভুক উদ্ভিদ সূর্যশিশির। কী এই সূর্যশিশির উদ্ভিদ? সূর্যশিশিরের ইংরেজি নাম সানডিউ (Sundew) বা ড্রোসেরা (Drosera)। উজ্জ্বল লাল রঙের ছোটো গোলাকার ফুলের মতো পাতা হয় এদের। আর এই পাতায় শিশিরবিন্দুর মতো চকচকে করে আঠা। চকচক করা আঠালো রসই হলো উদ্ভিদটির পতঙ্গ ধরার ফাঁদ। চকচক করার কারণে সহজেই কীট পতঙ্গ ঐ পাতায় আকৃষ্ট হয়। তাছাড়াও কীটপতঙ্গকে আকৃষ্ট করার জন্যে উদ্ভিদটি নিজেই একরকম সুগন্ধ ছড়ায়। ফলে সুগন্ধ আর চকচকে আঠালো রসে আকৃষ্ট হয়ে যখনই কোন পতঙ্গ এর উপরে বসে তখনই আঠালো রসে আটকে যায়। এরপর যতই পতঙ্গ নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে ততই উদ্ভিদের কর্ষিকাগুলি বেঁকে গিয়ে আরও বেশি পরিমাণে আঠালো রস নিঃসৃত করে। ফলে আরও শক্তভাবে পাতায় আটকে যায় কীট-পতঙ্গ। এরপর পাতাটি কুঁচকে গিয়ে আটকে যাওয়া পতঙ্গের চারপাশে একটি পেয়ালার মতো আকার সৃষ্টি করে। পোকাটির দেহের নরম অংশগুলো গলে পাতায় মিশে না যাওয়া পর্যন্ত এই উদ্ভিদের পরিপাকে সাহায্যকারী এনজাইমগুলো কাজ করে। চার-পাঁচ দিন পরে সূর্যশিশিরের পাতা ও বোঁটাগুলো আবার আগের মতো সোজা হয়ে যায়।

বুদবুদের কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের আধিকারিক সুব্রত সরকার জানিয়েছেন, সচরাচর এই ধরণের উদ্ভিদ উত্তরবঙ্গেই দেখা যায়। উত্তরবঙ্গের আবহাওয়াই এই উদ্ভিদের স্বাভাবিক বিকাশস্থল। এবছর প্রভূত পরিমাণে বৃষ্টি হওয়ায় কোনোভাবে শিবপুরে প্রাকৃতিক ভাব্রি এই উদ্ভিদের জন্ম হতে দেখা গেছে। আর এই লুপ্তপ্রায় উদ্ভিদ দেখতে কাঁকসার শিবপুর গ্রামে মানুষের ঢল নামছে প্রতিদিন। গ্রামের একটি পতিত জমিতেই এই উদ্ভিদ জন্মেছে বলে জানা যাচ্ছে। বিদবিহার গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য গিরিধারী সিনহা জানিয়েছেন, তাঁরা খবর পেয়ে দেখেন বেশ কিছু সূর্যশিশির উদ্ভিদ জন্মেছে। কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের আধিকারিক সুব্রতবাবু আরো জানান এই উদ্ভিদ সরাসরি পতঙ্গভুক অর্থাৎ এই উদ্ভিদ সব ধরণের পতঙ্গ গ্রাস করে ফেলে। এছাড়াও ভেষজ ওষুধ তৈরিতে এই গাছের ভূমিকা রয়েছে।