কর্নাটকে জল প্রকল্পে সংকটে গ্রামবাসীরা

কর্নাটকে জল প্রকল্পে সংকটে গ্রামবাসীরা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১১ এপ্রিল, ২০২২

পশ্চিমঘাট পর্বতমালার পাদদেশে কর্নাটকের হাসান জেলার একটি গ্রাম হাব্বানাহালি। গত ১৪ মার্চ পশ্চিমঘাট পর্বতমালারই একটি অংশ সেই গ্রামের ওপর ভেঙে পড়ল! বিরাট এক ধ্বসে। প্রায় ২০০০ টনের কাছাকাছি পরিমাণ পাথরের চাঁই ধ্বসে ভেঙে পড়ল সেই গ্রামের ঘরবাড়ি, জলের পাইপলাইনের ওপর। এর কারণ? পশ্চিমঘাট পর্বতমালায় অবস্থিত শাকেলসপুরে যে পার্বত্য নদী (নেত্রাবতী) রয়েছে সেখান থেকে সুড়ঙ্গ তৈরি হচ্ছিল। ডিনামাইট ফাটিয়ে পাহাড় কেটে। নেত্রাবতী নদী থেকে ২৪ হাজার মিলিয়ন কিউবিক ফিট জল তুলে সংলগ্ন পাঁচ জেলায় ৮৭৩ কিলোমিটার অঞ্চল জমিতে, যার মধ্যে রয়েছে ৬০০ একর জঙ্গল, সরবরাহ করা হবে। আর একটি বিশাল জলাধার ও আটটা বাঁধ তৈরি করা হবে যেখান থেকে ৩৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎও উৎপন্ন হবে। সেই সুড়ঙ্গ তৈরি করার সময়ই একটা লম্বা গিরিচূড়ার সৃষ্টি হয়েছিল। আর সেই গিরিচূড়াতেই প্রথম ধ্বসটা নামে। এই দুর্ঘটনায় মহাসংকটে পড়ে গিয়েছেন পশ্চিমঘাট পর্বতমালার পাদদেশে থাকা গোটা পাঁচেক গ্রামের মানুষ। ধ্বসে সুড়ঙ্গও ব্যপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার অনেক আগেই ডিনামাইট বিস্ফোরণে সুড়ঙ্গ তৈরির সময় একটি গ্রামের ঘর বাড়ি, স্কুলের দেওয়াল ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে। আর এই মহাধ্বসে সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চাষের জমি। অন্ধকার নেমে এসেছে আদিবাসীদের জীবিকা রোজগারে। কী করবেন তারা ভেবে পাচ্ছেন না। সরকার ইতিমধ্যে ২২ হাজার কোটি টাকা খরচ করে ফেলেছে জল তোলা এবং বিশাল সেই জলাধার তৈরি করার জন্য। আশ্চর্যের বিষয় জলাধার ও বাঁধ তৈরি হলে যে পশ্চিমঘাট পর্বতমালা পর্বতের পাদদেশে দুটো গ্রাম জলে ডুবে যাবে সেটা রাজ্য প্রশাসন জানত। তাও তারা এই প্রকল্পের উদ্যোগ নিয়েছিল।
শেষপর্যন্ত প্রতিশোধ নিয়েছে প্রকৃতি! কিন্তু স্থানীয় আদিবাসীদের দুর্যোগ কীভাবে কাটবে কে জানে!