রহস্যময় কণা, যুগান্তকারী আবিষ্কার পদার্থ বিদ্যায়

রহস্যময় কণা, যুগান্তকারী আবিষ্কার পদার্থ বিদ্যায়

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৪ এপ্রিল, ২০২২

অভিকর্ষ, তড়িৎ-চুম্বকীয় বল, সবল নিউক্লিয় বল এবং দুর্বল নিউক্লিয় বল— মূলত এই চার ধরণের বলের অস্তিত্ব রয়েছে ব্রহ্মাণ্ডে। অন্তত এখনও পর্যন্ত পদার্থবিদ্যার সমস্ত সূত্রই দাঁড়িয়ে রয়েছে এই তত্ত্বের ওপরেই। তবে এই চারের বলের বাইরেও এবার পঞ্চম বলের অস্তিত্বের আভাস দিল সাম্প্রতিক আবিষ্কার। শিকাগোর ফার্মিল্যাব কোলাইডার ডিটেক্টর যন্ত্রে সম্প্রতি ধরা দিল রহস্যময় উপ-পারমাণবিক কণা। তার চরিত্রের বিশ্লেষণই ইঙ্গিত দিচ্ছে পঞ্চম বলের অস্তিত্বের কথা।

ইলিনয়ের পরীক্ষাগারের কণাত্বরকে ধরা পড়া সাব-অ্যাটোমিক পার্টিকল বা উপ-পারমাণবিক কণাটি আদতে একটি বিশেষ ধরনের বোসন কণা। যা পরিচিত ‘ডব্লু বোসন’ নামে। এই কণা নতুন নয়। বহু আগে থেকেই পদার্থবিদদের কাছে অতি-পরিচিত এই কণার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় ডব্লু-বোসনের ভর নির্ণয়ের চেষ্টা করেছিলেন গবেষকরা। আর সেই পরীক্ষার ফলাফলই রীতিমতো চমকে দেয় বিজ্ঞানীদের।
গাণিতিকভাবে ডব্লু বোসন কণার যা ভর হওয়া উচিত, পরীক্ষালব্ধ ফলাফল অনুযায়ী তার ভর প্রায় দ্বিগুণ। প্রাথমিকভাবে যান্ত্রিক বা প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণেই এমন ফলাফল এসেছে বলে মনে করেছিলেন গবেষকরা। তবে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রথম সারির গবেষকরা সংশ্লিষ্ট ফলাফল ও বিশ্লেষণ দেখে নিশ্চিত করেছেন, প্রথমবারের জন্য ০.০১ শতাংশ নির্ভুলতার সঙ্গে পরিমাপ করা হয়েছে ডব্লু বোসনের ভর। এর আগে পঞ্চম বলের অস্তিত্বের সম্পর্কে ধারণা দিয়েছিলেন বহু বিজ্ঞানীই। ব্রহ্মাণ্ডে উপস্থিত ডার্ক ম্যাটার এই বিশেষ বলের ক্রিয়াতেই তৈরি বলে দাবি করেছিলেন অনেকেই। কিন্তু তার স্পষ্ট কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি এতদিন। ডব্লু বোসনের ভর রহস্যই যেন সেই সমাধান না হওয়া পাজলের হারানো অংশ। খ্যাতনামা জ্যোতির্বিদ কার্ল সেগানের অভিমত তেমনই। আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতাবাদ তত্ত্বের পর এটিই পদার্থবিদ্যার জগতে যুগান্তকারী আবিষ্কার বলে মনে করছেন তিনি। সম্প্রতি এই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘সায়েন্স’ জার্নালে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × four =