বিশ্ব উষ্ণায়নে বিপরীত ছবি আইসল্যান্ডে

বিশ্ব উষ্ণায়নে বিপরীত ছবি আইসল্যান্ডে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৩ এপ্রিল, ২০২২

বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে দ্রুত গলছে মেরু প্রদেশের বরফ। ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে সমুদ্রের জলতল। ভাঙনের শিকার হচ্ছে উপকূলবর্তী অঞ্চল। গোটা বিশ্বজুড়েই মোটামুটি একই ছবি। তবে আইসল্যান্ডের উত্তর উপকূলের হফেন গ্রামের ছবিটা অন্যরকম। সেখানে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির পরিবর্তে ক্রমশ কমে যাচ্ছে। আইসল্যান্ডের মূল নগর সভ্যতা থেকে বিচ্ছিন্ন শহরগুলির মধ্যে অন্যতম হফেন। গোটা অঞ্চলটিই অবস্থিত হিমবাহের ওপরে। ফলত, কয়েক শতাব্দী ধরেই এই অঞ্চলের মানুষদের জীবন ও জীবিকা নির্ভরশীল শিকার, প্রধানত মৎস্যশিকারের ওপরেই। তবে সম্প্রতি বদলে গেছে পরিস্থিতি। ক্রমশ জলতলের গভীরতা কমে যাওয়ায় উপকূলবর্তী সমুদ্রে মাছ ধরার ট্রলার চলাচলই দায় হয়ে উঠেছে। সেইসঙ্গে জলস্রোতের পরিমাণ হ্রাস পাওয়ায় কমেছে মাছের সংখ্যাও। এই একই ঘটনা দেখা যাচ্ছে গ্রিনল্যান্ডেরও বেশ কিছু অঞ্চলে। সম্প্রতি এই বিচিত্র ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়েই গবেষকরা আবিষ্কার করেন এর পিছনে দায়ী আদতে গ্লোবাল ওয়ার্মিং। সাধারণত আইস এজ বা হিমযুগের সময় থেকেই আইসল্যান্ড, গ্রিনল্যান্ড-সহ আর্কটিক পরিধির মধ্যে অবস্থিত দেশগুলি ঢাক ছিল বিশালায়তন হিমবাহ। গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর কারণে দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে এই সকল হিমবাহগুলি। ফলে সামগ্রিকভাবে বাড়ছে পৃথিবীর জলতলের উচ্চতা।
পরিসংখ্যান বলছে, প্রতিবছর আইসল্যান্ডের বুক থেকে মুছে যাচ্ছে ১৭০ কোটি টন হিমবাহ। এই বিপুল পরিমাণ জল একদিকে যেমন সমুদ্রের জলতল বৃদ্ধি করছে। তেমনই ক্রমশ বাড়াচ্ছে আইসল্যান্ডের ভূমিতলের উচ্চতাও। প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১.৭ সেন্টিমিটার করে উঁচু হচ্ছে হফেনের মাটি। গবেষকদের অনুমান, চলতি শতাব্দীর শেষেই গলে যাবে আইসল্যান্ড ও গ্রিনল্যান্ডের অধিকাংশ অঞ্চলের বরফ। ফলে, জীবিকাহীন হয়ে পড়বেন উপকূলবর্তী অসংখ্য মানুষ। সেইসঙ্গে গোটা পৃথিবীর জলতল বৃদ্ধি পেতে পারে ৭০ সেন্টিমিটার বা আড়াই ফুট। যা গোটা পৃথিবীর কাছেই এক অশনি সংকেত।