১৮৮২ সালে ব্রিটিশ অধ্যুষিত সেন্ট হেলেনা দ্বীপের গভর্নর স্যার উইলিয়াম গ্রে-ইউলসনকে এক বিশেষ বিশেষ উপহার পাঠিয়েছিল ইতালি। আজও সেই দ্বীপে গেলে দেখা যাবে সেই বিশেষ উপহারের।
একটি পোষ্য। তার ওজন প্রায় চারশো কিলোগ্রাম। ব্রিটিশ গভর্নরকে খুশি করতে প্রকাণ্ড এক কচ্ছপ উপহার দিয়েছিল ইতালি সরকার। ‘জোনাথন’-খ্যাত সেই দৈত্যাকার কচ্ছপ আজও জীবিত রয়েছে সেন্ট হেলেনায়। জোনাথনই এই বিশ্বের প্রবীণতম জীবিত স্থলচর প্রাণী।
২০২২-এ জোনাথনের বয়স হল ১৯০! যদিও এটি আনুমানিক বয়স। কারণ, কোনও চিড়িয়াখানা বা কৃত্রিম প্রজননক্ষেত্রে জন্মায়নি জোনাথন। ভারত মহাসাগরীয় সেশেলস দ্বীপপুঞ্জ থেকে নিয়ে আসা হয় তাকে। বন্যপ্রাণীর বয়স নির্ণয় করার কোনও প্রযুক্তি সেভাবে আবিষ্কৃত হয়নি তখনও। ফলে, ১৮৮২ সালের নথিতে জোনাথনের বয়স সম্পর্কে কোনো উল্লেখ নেই। হিসেব অনুযায়ী রানি ভিক্টোরিয়ার সিংহাসনপ্রাপ্তি থেকে শুরু করে দুই বিশ্বযুদ্ধ, তিনটি মহামারী— সবকিছুরই সাক্ষী থেকেছে জোনাথন। তবে মজার বিষয় হল, বিশ শতকের শেষের দিকেও ভাবা হত জোনাথন ভারত মহাসাগরীয় দৈত্যাকার কচ্ছপ প্রজাতির প্রাণী। তবে পরে দেখা যায় সেটি সেশেলস দ্বীপপুঞ্জের ‘জায়েন্ট টরটয়েস’। যা সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং অবলুপ্তপ্রায় একটি প্রজাতি। এবং আশ্চর্যজনক বিষয় হল, এই কচ্ছপ জলের স্পর্শ সহ্য করতে পারে না একেবারেই। ১৪০ বছরের ইতিহাসে হাতে গুনে মাত্র কয়েকবারই চান করেছে সে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়েছে জোনাথনের। তবে এখনও তার শ্রবণশক্তি ঝরঝরে। চিকিৎসক জো হলিন্সের কথায় দিব্যি সাড়া দেয় সে। হলিন্সের অভিমত, এখনও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী জোনাথন। ফলে, ২০০-তে পা দেওয়াও তার কাছে অস্বাভাবিক কিছুই নয়।