মঙ্গলের পৃষ্ঠে নাসার পাশাপাশি ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির মহাকাশযানও ঘুরে বেড়াচ্ছে তথ্য সন্ধানের জন্য। সম্প্রতি ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির মার্স এক্সপ্রেস অরবিটার একটি ছবি প্রকাশ করেছে। ছবিটিতে মঙ্গলের পৃষ্ঠে একটি ‘থাবার’ চিহ্ন দেখা গিয়েছে। যাকে জ্যোর্বিজ্ঞানীরা বলছেন ক্ল-মার্কস। একইসঙ্গে বেশ কিছু আঁচড়ের দাগও ছবিটিতে দেখা গিয়েছে। বিজ্ঞানীদের মনে হয়েছে এই দাগগুলোর সৃষ্টি হয়েছে ট্যান্টালাস ফসে থেকে। ট্যান্টালাস ফসে হল আসলে মঙ্গলের একটি বিশাল ফল্ট সিস্টেম বা চ্যুতি। তারই অংশ এই সমস্ত আঁচড়ের দাগ। ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি যে থাবার চিহ্নের ছবিটি প্রকাশ করেছে তার আকার আয়তনও ভাবাচ্ছে বিজ্ঞানীদের। ওটি একটি কুণ্ডের মত। যার গভীরতা ৩৫০ মিটার পর্যন্ত হতে পারে। চওড়া হতে পারে ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত। বিজ্ঞানীদের মতে এর বিস্তৃতি হতে পারে ১ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত!
মঙ্গলে লুকিয়ে রয়েছে অনেক অজানা রহস্য। সেটা প্রকাশ্যে আনার জন্যই মঙ্গলের পৃষ্ঠে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে একাধিক রোবট। তাদের নিরলস পরিশ্রমে প্রায় প্রত্যেকদিন বিজ্ঞানীরা দেখতে পাচ্ছেন নিত্যনতুন ছবি। সাম্প্রতিক ছবিটি তোলা হয়েছে মঙ্গলগ্রহের একটা নিচু আগ্নেয়গিরির কাছে। যার নাম অ্যালবা মনস। এরই পূর্ব দিকের ঢালে রয়েছে অবনত অংশটি। অ্যালবা মনসের চূড়ার অংশটির উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চারপাশের অংশের বিচ্যুতি, বিস্তৃতি, প্রসারণ, সব কিছুর সৃষ্টি। আরে তার ফলেই তৈরি হয়েছে ফসে-র। ইএসএ-র মার্স এক্সপ্রেস অরবিটারের হাই-রেজোলিউশন স্টিরিও ক্যামেরায় থাকা কালার চ্যানেলের মাধ্যমে তোলা এই ছবি দেখলে বোঝা যাবে ফসে আসলে একটি ফাঁকা অংশ। ভূ-গাঠনিক প্রক্রিয়ায় গ্র্যাবেন নামের একরকমের ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়। মঙ্গলের ট্যান্টালাস ফসে ফল্ট-কে বিজ্ঞানীরা গ্র্যাবেনের আদর্শ উদাহরণ বলছেন। বিজ্ঞানীদের মত, এরকম আরও অনেক গ্র্যাবেনের ছবি হয়ত আগামীদিনে দেখা যাবে। ২০০৩ থেকে মঙ্গলের চারপাশে প্রদক্ষিণ করছে মার্স এক্সপ্রেস অরবিটার।