আবিষ্কৃত বিশ্বের সবচেয়ে ছোট রোবট

আবিষ্কৃত বিশ্বের সবচেয়ে ছোট রোবট

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন বিশ্বের ক্ষুদ্রতম রোবট। দেখতে হুবহু কাঁকড়ার মত। আকারে এই রোবট মাছির চেয়েও ছোট, ০.০৫ মিলিমিটার চওড়া! আবিষ্কারকদের নেতৃত্বে রয়েছেন অধ্যাপক জন রজার্স এবং তার সহযোগীরা। এদের চলাফেরাও কাঁকড়ার মত। রিমোট কন্ট্রোলে চালিত এই রোবট হাঁটতে পারে, বেঁকে যেতে পারে, হামাগুড়ি দিতে পারে, এমনকী, লাফও দিতে পারে। গত ২৫ এই আবিষ্কারের কথা প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা জার্নাল সায়েন্স রোবটিক্সে। কী কাজে পাগতে পারে এই রোবট? গবেষকদের মতে ভবিষ্যতে হার্ট সার্জারিতে ব্যবহার করা যেতে পারে এই রোবটগুলিকে। এতটাই শক্তিশালীভাবে তৈরি করা হয়েছে এদের যে ধমনীতে বন্ধ করা বা ক্যানসারের টিউমারের সঙ্গেও লড়াই করতে পারবে এরা! এক বিবৃতির মাধ্যমে অধ্যাপক জন রজার্স বলেছেন, ‘ভবিষ্যতে যে কোনও ছোট শিল্পে নিয়মিত ব্যবহার করা যেতে পারে এই মাইক্রো রোবটগুলোকে। এরা মেশিন সারানো থেকে শুরু করে একত্রিত এজেন্ট হিসেবে কাজ করতে পারবে এরা। আবার মানুষের শরীরে এই রোবট যথেষ্ঠ কার্যকরী হয়ে উঠতে পারে। যেমন আটকে থাকা ধমনী পরিষ্কার করা, আভ্যন্তরীণ রক্তপাত বন্ধ করা, এমনকী, ক্যানসারের টিউমার নির্মুলের জন্য অত্রোপচারের কাজে সহযোগীর ভূমিকা পালনের কাজও এই মাইক্রো রোবটকে দিয়ে হবে!’
গবেষকরা জানিয়েছেন, এই রোবট সিলিকন-যুক্ত অত্যন্ত পাতলা একটি উপাদানের সহায়তায় তৈরি করা হয়েছে। এটা স্থিতিস্থাপক কিন্তু লেজার রশ্মির সহায়তায় একে গরম করলে এর আকারের পরিবর্তন হয়। পরে ঠাণ্ডা হয়ে গেলে এই রোবট আবার তার আসল চেহারায় ফিরে আসে। আর আকারে ছোট বলে এদের গতিও যথেষ্ট। শরীরের দৈর্ঘ্যের অর্ধেক গড় গতিতে হাঁটতে পারে এই রোবটগুলি, জানিয়েছেন গবেষকদের আর একজন, ইয়ংগাং হুয়াং। আট বছর আগে শিশুদের জন্য তৈরি করা একটি থ্রি-ডি পপ-আপ বই তৈরি পদ্ধতির ব্যবহার করেই এই মাইক্রো রোবট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন জন রজার্স।
রজার্স আরও বলেছেন, “রোবটদের এই জগৎটা এত বছর ধরে শুধু বিনোদনের জন্যই হয়ত বেঁচে ছিল। কিন্তু গত দশ বছর রোবটের কার্যকলাপ বুঝিয়েছে, তারা আর শুধু বিনোদন নয়, মানুষ এবং সমাজের প্রয়োজনেও সমানভাবে লাগতে পারে। আমাদের এই মাইক্রো রোবটও তারই প্রতিফলন। আমাদের আশা ভবিষ্যতেও এরকম মাইক্রো রোবট তৈরি করবেন বিজ্ঞানীরা, যা মানুষের গুরুতর প্রয়োজনে লাগবে।”