দুই নদীর ওপর রাস্তা নির্মাণে ক্ষুব্ধ দেহরাদুন

দুই নদীর ওপর রাস্তা নির্মাণে ক্ষুব্ধ দেহরাদুন

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২০ জুন, ২০২২

ট্র্যাফিক এড়াতে দেহরাদুনের রিস্পানা এবং বিন্দাল, এই দুই নদীর ওপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করতে চলেছে উত্তরাখণ্ড সরকার। তাতেই অসহায় দেহরাদুন। ক্ষুব্ধ ও সোচ্চার দেহরাদুনের অধিবাসী ও পরিবেশকর্মীরা।
রিস্পানা ও বিন্দাল– দুটি নদীই ক্রমশ মৃত্যুগামী। এদের মধ্যে রিস্পানার উৎস মুসৌরির লাল টপ্পা টিলায়। সেখান থেকে ম্যাসে ও শিখর জলপ্রপাত প্রদক্ষিণ করে দেহরাদুনে প্রবেশ করে এই নদী। অপরদিকে, গ্রীষ্মে জল নেমে যায় বিন্দালের। বর্ষায় সে দেহরাদুনকে বাঁচায়, বন্যার হাত থেকে। দুটি নদীই শহরের প্রাণ। রিস্পানা মাটির ওপর ও নিচ, দুভাবেই প্রবাহিত হয়। ফলে দেহরাদুন শহরকে ভুগর্ভস্থ জলের যোগান দেয় এই নদী। সম্প্রতি রাজপুর খালের দৌলতে মধ্য-দেহরাদুনেও ঢুকেছে রিস্পানার জল। পাশাপাশি নদীতীরে ছোটো ছোটো ধানক্ষেতেও জলের প্রধান উৎস এই নদীটি। দুন সায়েন্স ফোরামের কো-অর্ডিনেটর বিজয় ভট্ট দেখেছেন একসময়ের স্ফটিক-স্বচ্ছ রিস্পানাকে বর্জ্যের পাহাড়ে পথ হারাতে। শহরবাসীরা রিস্পানার জলে ছুঁড়ে ফেলছে ময়লা। নদীর পাড়ে গজিয়ে উঠেছে বেআইনি জনবসতি। অতিদ্রুত নগরায়ণ এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধিকেও কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন পরিবেশবিদরা। যার প্রতিফলনে একশো মিটার চওড়া নদীটি পরিণত হয়েছে মাত্র ১০-২০ মিটারের সরু খালে। বেড়ে চলেছে শহরের জল সংক্রান্ত সমস্যাও। এবছর মার্চ মাসের একটি রিপোর্ট বলছে, দিনে ৩২৪.৯১ মিলিয়ন জল দৈনিক প্রয়োজন দেহরাদুনের। সেখানে সরবরাহ করা হচ্ছে মাত্র ২৭৫. ১২ মিলিয়ন লিটার জল। ২০১৫ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে শহরের ভুগর্ভস্থ জলও নেমেছে ব্যাপক হারে। শহরবাসীদের আর্তির উত্তরে, মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং জানিয়েছিলেন ‘মিশন রিস্পানা’র কথা। যেখানে নদীর পাড় বেয়ে পোঁতা হবে প্রায় আড়াই লক্ষ গাছ। ধুঁকতে থাকা নদী আবার ফিরে যাবে ‘ঋষিপর্ণা’র টলটলে কলেবরে। কিন্তু উন্নয়নের চাপে সেই মিশন বন্ধ। ফলে বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো ৪,৫২৫.৫৩ কোটি এবং ৪৯২৭.১৮ কোটির দুটি রাস্তা নির্মাণের ফরমান জারি হতেই সোচ্চার দেহরাদুনবাসী।