দূষণবৃদ্ধিতে হিমালয় জুড়ে পর্যটনশিল্পে লাগাম চান গবেষকরা

দূষণবৃদ্ধিতে হিমালয় জুড়ে পর্যটনশিল্পে লাগাম চান গবেষকরা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা।
Posted on ১৮ জুলাই, ২০২২

ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে হিমালয়। প্লাস্টিক, রাসায়নিক দূষণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কার্বন নির্গমন। এর কারণও সঙ্গত। গত কয়েকবছর হিমালয়ের বিভিন্ন অঞ্চলে পর্যটনশিল্পের বাড়বাড়ন্ত। গাড়ি নিয়ে হিমালয়ের বিভিন্ন অঞ্চলে বেড়ানোর প্রবণতা বেড়ে গিয়েছে। আর এরই প্রতিফলন ক্রমবর্ধমান বায়ুদূষণ। গবেষক ও পরিবেশবিদদের নজরে অতিরিক্ত কার্বন নির্গমন অনেকদিন ধরেই পড়ছে। তাই সম্প্রতি গবেষকদের দেওয়া মত, হিমালয়কে বাঁচাতে এবং প্রকৃতিকে রক্ষার স্বার্থে পাহাড়ে লাগামহীন পর্যটনকে নিয়ন্ত্রণ করা হোক। পাহাড়ে নিয়ন্ত্রিত হোক গাড়ি চলাচলের মাত্রা।
এনভায়র্নমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড পলিউশন রিসার্চ জার্নালে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণাপত্র। মূলত বিগত দু’দশক ধরে স্যাটালাইটের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল পশ্চিম হিমালয়ের দ্রাস অববাহিকার হিমাবাহগুলিকে। সেই ছবি বিশ্লেষণ করেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ২০০০ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ভয়াবহভাবে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছে ৭৭টি হিমবাহ। সবমিলিয়ে শুধু লাদাখে হিমবাহের আয়তন কমেছে প্রায় ১৭১.৪৬ বর্গকিমি। যা মোট হিমবাহের এলাকার প্রায় ৩ শতাংশ। এই ঘটনার জন্য গবেষকরা দায়ী করছেন মূলত যান চলাচলকেই। জলবায়ু বিশেষজ্ঞ শাকিল আহমেদ রমশুর অভিমত, মূলত কালো কার্বনের আধিক্যই বিপর্যস্ত করে তুলেছে হিমালয়ের পরিবেশকে। যা কল-কারখানা থেকে নয়, বরং উৎপাদিত হয় গাড়ির ধোঁয়া থেকেই। সবমিলিয়ে কার্বন নির্গমনের ৬০ শতাংশের পিছনে দায়ী এই যান চলাচলই। পরিসংখ্যান বলছে, ২০০২-এ লাদাখের বায়ুতে কার্বনের ঘনত্ব ছিল ২৩৮ ন্যানোগ্রাম প্রতি ঘনমিটারে। যা ২০২২-এ পৌছেছে ৬৩৪ ন্যানোগ্রামে! অত্যাধিক পর্যটনের কারণে ব্যাপক মাত্রায় কার্বন নির্গত হচ্ছে লাদাখের পরিবেশে। এভাবেই চলতে থাকলে আগামী কয়েক দশকের মধ্যে হিমবাহশূন্য হয়ে পড়তে পারে লাদাখ। আর সেই কারণেই পর্যটন শিল্পে রেশ টানতে বলছেন গবেষকরা।