গুজরাটে গির অভয়ারণ্য হলো এশিয়ার সিংহের একমাত্র প্রাকৃতিক আবাসস্থল। রাজ্যের বনবিভাগের হিসেব অনুযায়ী গির-এ ২০২০ সালে সিংহ ছিল প্রায় ৪০০ টি। রাজ্যের বাকি অংশে সিংহ ছিল ২৭৫ টি। এর মধ্যে ১০৪ টি গুজরাটের উপকুল রেখার ৩০০ কিমি জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। বিশেষজ্ঞদের ধারণা উপকুল অঞ্চলে এত পরিমাণ সিংহের থাকার কারণ তাদের প্রাকৃতিক আবাসস্থলের সমস্যা। বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ডঃ নিশিথ ধারিয়া বলেছেন, সাধারণভাবে সিংহের পক্ষে উপকুলীয় আবাসস্থলের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া কঠিন। কিন্তু থাকার জায়গার অভাবের কারণে সিংহের আর বিকল্প নেই। বহু বিশেষজ্ঞ বহুদিন ধরেই বলে আসছেন, গির স্থানীয় প্রাণীদের জন্যে খুবই ছোটো হয়ে গেছে। বনকর্তাদের অভিমত গত শকের ন’য়ের দশকে বনাঞ্চলে সিংহের নিজেদের মধ্যে সীমানা নিয়ে লড়াইয়ে অনেক সিংহ সমুদ্র উপকূলের দিকে সরে যেতে থাকে। প্রসঙ্গত সিংহ দল বেঁধে শিকার করলেও প্রতিটি সিংহের নির্দিষ্ট এলাকা থাকে। একটি সিংহের বিচরণের জন্যে প্রায় ১০০ বর্গ কিমি এলাকা লাগে। ঐ অঞ্চলে একটি পুরুষ সিংহ, কিছু সিংহী ও তাদের শাবক নিয়ে বাস করে। শাবক বড় হলে হয় সিংহকে বিতাড়ন করে বা নতুন অঞ্চল খুঁজে নেয়। গুজরাটের উপকুল অঞ্চল বর্তমানে যে সিংহদের আবাসস্থল, সেখানে মূলত হেরান নদী গিরের মধ্যে দিয়ে সোমনাথ জেলায় আরব সাগরে পড়েছে। সৈকতের কাছে স্থানীয়রা তাই বর্তমানে সিংহ দেখতে পান নানা সময়। তবে এখনো মানুষের ওপর আক্রমণের খবর নেই। যথেষ্ট নীলগাই পাওয়া না গেলে স্থানীয় গ্রামের গরু বাছুর ধরে খাওয়ার একাধিক নমুনা মিলেছে যদিও। তবে এতে শুয়োর এবং নীল গাইয়ের পালকে মোকাবিলা করা সহজ হয়ে গেছে স্থানীয় খামারের মালিকদের। একজন রেঞ্জ ফরেস্ট অফিসার এইচ ডি গালচার বলেছেন, বনবিভাগের উদ্যোগে উপকূল অঞ্চলে গাম, অ্যারাবিক গাছ লাগানো শুরু হলে বন বিভাগ সিংহের সংখ্যা উপকূল অঞ্চলে বাড়ার বিষয়টি লক্ষ্য করেন।