উত্তরবঙ্গে হাতির সঙ্গে মানুষের সংঘর্ষ গত ৩৫ বছরের! হাতির যাতায়াতে আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ির প্রায় ১০০টি চা বাগান পড়ে। পরিসংখ্যান জানিয়েছে, ২০১৪ থেকে ২০২১-এর মধ্যে এই দুই জেলায় ১০ হাজারের বেশি বাড়ি হাতির হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত, ৮ হাজার হেক্টরের বেশি জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। গত সাত বছরে এই দুই জেলা মিলিয়ে মানুষের মৃত্যু হয়েছে ২৫০ জনেরও বেশি!
এই অবস্থায়, হাতি ও মানুষ-উভয়কে বাঁচানোর স্বার্থেই পশ্চিমবঙ্গের বনমন্ত্রক সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তরবঙ্গে হাতির যাতায়াতের আলাদা ‘করিডোর’ তৈরি করা হবে। হাতি সংরক্ষণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার তৈরি করেছে প্রোজেক্ট এলিফ্যান্ট প্রকল্প। তারই অধীনে রাজ্য সরকার উত্তরবঙ্গে তৈরি করেছে ইষ্টার্ণ ডুয়ার্স এলিফ্যান্ট রিজার্ভ আর দক্ষিণবঙ্গে তৈরি হয়েছে ময়ূরঝর্ণা এলিফ্যান্ট রিজার্ভ। তবে এই মুহূর্তে উত্তরবঙ্গের মানুষ এবং হাতির পারস্পরিক সংঘর্ষ নিয়ে উদ্বিগ্ন শাসককূল। মানুষের মৃত্যুর হিসেব যেমন জানা গিয়েছে সেরকম পরিসংখ্যান এ-ও জানিয়েছে যে ডুয়ার্সকে বলা হয় হাতির মৃত্যু উপত্যকা। ডুয়ার্সের রেলপথে ১৯৭৪ থেকে ২০২০-র মধ্যে প্রায় ৭৫টি হাতি মারা গিয়েছে ডুয়ার্সের চলা রেলের ধাকায়।
তাই একটা করিডোর নয়, একাধিক করিডোর এবং তার সঙ্গে আলিপুরদুয়ার জেলার জয়গাঁ থেকে হাসিমারা পর্যন্ত এশিয়ান হাইওয়ের একাংশের সম্প্রসারণের প্রস্তাবও দিয়েছে রাজ্য বনমন্ত্রক। যাতে উঁচু হাইওয়ের পাশ দিয়ে হাতির দলের চলাচলে অসুবিধা না হয়। গত ৩০ বছরে ইস্টার্ণ ডুয়ার্স এলিফ্যান্ট রিজার্ভে হাতির সংখ্যা বেড়ে এখন ৬৫০ হয়েছে। অথচ জঙ্গলের আয়তন বাড়েনি, সেই ৯৭৮ বর্গকিলোমিটারই রয়ে গিয়েছে। তবে একইসঙ্গে বিশেষজ্ঞদের মত, হাতি আর মানুষের সংঘর্ষ কমাতে কেন্দ্রীয় সরকারকেও করিডোর তৈরির বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে।